গরু চোর’ অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে প্রকাশ্যে নির্যাতন
জেলা প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের চকরিয়ায় মা ও মেয়েকে ‘গরু চোর’আখ্যা দিয়ে রশিতে বেঁধে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে।
একদল দুর্বৃত্ত কোমরে রশি বেঁধে মা-মেয়েকে প্রকাশ্য সড়কে হাটিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও হারবাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম নিজেই তাদের মারপিট করে।
মারপিটের একপর্যায়ে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে পুলিশ এসে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তাদের চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে হারবাং পহরচাঁদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনা ও ছবি প্রকাশের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। বর্তমানে তারা চকরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছে, তাদের শারীরিক অবস্থা আশংকামুক্ত নয়।
অপরদিকে এলাকাবাসীর ধারনা মেয়ে বিয়েতে রাজী না হওয়ায় গরু চোরের অপবাদ দিয়ে তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার হারবাং তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার স্থানীয়রা ফাঁড়িতে খবর দিলে আমরা ফোর্স পাঠাই। আমাদের ফোর্স গিয়ে গুরুতর অবস্থায় মা মেয়েকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসি। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তির দায়ের করা গরু চুরির মামলায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে মা-মেয়েসহ চার জনের বাড়ি পটিয়ার শান্তির হাটে। অপরজনের বাড়ি পেকুয়া লালব্রিজ এলাকায়।
হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তাদের উপর নির্যাতন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ কেউ করেনি। আমাদের ফোর্স যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন সেখানে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে তাদেরকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে আসাটাই প্রাধান্য দিয়েছি।
তবে ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী অভিযোগ করেছেন, একদফা মা-মেয়ের ওপর নির্যাতন চলার পর হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) পাঠিয়ে তাদেরকে রশিতে বেঁধে তার কার্যালয়ে এনে আবার নির্মমভাবে নির্যাতন করেন।
উপর্যুপরি নির্যাতন শেষে চেয়ারম্যানের লোকেরাই তদন্ত কেন্দ্রে ফোন করে পুলিশ এনে তাদের হাতে মা-মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় তুলে দেন।