চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ার দেওয়ার অভিযোগ
আপরাধ প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামের পটিয়ায় এক প্রবাসীকে ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ দুই পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
রোববার পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বেশ্বর সিংহের আদালতে মামলাটি করেন নিহতের মামা আহমদ নবী। মামলায় চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আমিনুল ইসলামসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নুর মিয়া বলেন, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নিদেশ দিয়েছেন।
এজাহারে বলা হয়, নিহত জাফর একজন ওমানপ্রবাসী। গত ১২ মার্চ তিনি দেশে ছুটিতে আসেন। করোনার কারণে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আর বিদেশে যেতে পারেননি। গত ২৯ জুলাই নিহত জাফরের গ্রামের বাড়ি পটিয়ার কচুয়াই ইউনিয়নের ভাইয়ার দিঘির পাড় এলাকায় আসেন চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান এবং এসআই আমিনুল ইসলাম।
তারা জাফরের সঙ্গে কথা বলে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যান। পরে চকরিয়ার ওসি জাফরের স্ত্রীর মুঠোফোনে ফোন করে বলেন, জাফর একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাকে ছাড়াতে হলে ৫০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা কোথা থেকে দেবে চিন্তায় পড়ে যায় নিহতের পরিবার। এ দিকে চকরিয়া থানা থেকে ফোন করে বারবার বলা হয় টাকা না দিলে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে। নিহতের পরিবার প্রাণভিক্ষা চাইলেও চকরিয়া থানা-পুলিশ তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। দুই দিন পর ৩১ জুলাই পটিয়া থানা থেকে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারকে ফোন করে জানানো হয় জাফর চকরিয়ার ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। পরে নিহতের পরিবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে দেখেন লাশ পড়ে আছে। মামলায় নয়জনকে সাক্ষী রাখা হয়।
জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, মামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এই মাত্র শুনলেন। ক্রসফায়ারের নামে কারও কাছে ৫০ লাখ টাকা চাননি তিনি।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আমিনুল ইসলামও দাবি করেন, তিনি জাফর নামে কাউকে চেনেন না। এ ঘটনায় কোনোভাবেই তিনি জড়িত নন।
মামলার বাদী ও নিহতের মামা আহমদ নবী বলেন, ‘একজন জলজ্যান্ত মানুষকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজিয়ে ক্রসফায়ারে দেবে তা হয় না। জড়িত পুলিশ সদস্যেদের বিচার চাই।’