বিএনপি ও তার সহযোগিরা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় যেতে চাইছে – শ ম রেজাউল করিম

Picsart_22-12-11_17-19-39-430.jpg

বিএনপি ও তার সহযোগিরা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় যেতে চাইছে – শ ম রেজাউল করিম

সাগর চৌধুরীঃ বিএনপি ও তার সহযোগিরা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় যেতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

আজ রবিবার (১১ ডিসেম্বর২০২২) সকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা, গুণিজন সংবর্ধনা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও দৈনিক ভোরের আকাশ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচিত সরকার যারা নতুন করে নির্বাচিত হয়ে আসবে, তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে-এটা সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। বিএনপি ও তাদের সহযোগিরা বলছে এসব মানি না। তার মানে সংবিধানিক বিধি-বিধান তারা মানে না। তারা যা কিছু বলছে, এটা সংবিধানের বিধি-বিধান পরিপন্থী। দেশের সংবিধান অনুযায়ী অসাংবিধানিক কিছু করলে সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা।সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের এ কৃতকর্ম রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের শামিল।

তিনি আরও যোগ করেন, বিএনপি ও তাদের সহযোগিরা আগুন দিয়ে, পেট্রোল দিয়ে, রাস্তাঘাট ধ্বংস করে যে ইমেজ সংকটে পড়েছিল সে ইমেজ সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নতুন করে আবার তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার এবং সাংবিধানিক পন্থায় যারা ক্ষমতায় আছে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

রাজনীতির সঠিক পথে না থাকলে একসময় মাইক্রোস্কোপ দিয়ে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনের নামে বাংলাদেশকে পেট্রোলের বার্ণ ইউনিটে পরিণত করেছিল বিএনপি-জামায়াত ও তাদের জোট। দেশের মানুষ তা ভুলে যায় নি। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন প্রতিহত করার নামে পাঁচ হাজারের ঊর্ধ্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিয়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ধ্বংস করা। কিন্তু তারা সেটা করতে পারে নি, দেশে অসাংবিধানিক সরকার আর ক্ষমতায় আসতে পারে নি। এখনও তাদের লক্ষ্য সেটা।

বিএনপির উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, অসংবিধানিক পন্থায় অথবা গণদুশমনে পরিণত হতে পারে এমন জনবিমুখ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে এক সময় অস্তিত্বের সংকট দেখা দিতে পারে। রাজনীতিতে কেউ ভুল করলে তার সাথে মানুষ চিরদিন থাকে না। এদেশের মানুষ শেখ হাসিনাতে আস্থা স্থাপন করেছে। কারণ মানুষের মৌলিক অধিকার শেখ হাসিনা নিশ্চিত করেছেন। করোনার ভয়াবহ সংকটে শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ও অসাধারণ রাষ্ট্র পরিচালনায় বাংলাদেশে কেউ না খেয়ে মরেনি, বিনা চিকিৎসায় মারা যায়নি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এই বাংলাদেশের মানুষের আস্থার জায়গা শেখ হাসিনা। তারা মনে করে শেখ হাসিনা থাকলে অধিকার নিশ্চিত হয়। শেখ হাসিনা থাকলে চিকিৎসা, খাদ্য, বাসস্থান সবকিছু নিশ্চিত হয়।

তিনি আরও বলেন, বিজয়ের মাসে বিজয়ে পরাজিতরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত মাড়িয়ে তাদের আবার এ বাংলাদেশে চাঁদ-তারা পতাকা উড়ানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। যে একাত্তরের বিজয় ধ্বংস করার জন্য পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি করেছিল তাকে পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে থাকার সুযোগ করে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ করে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে উল্টে দেয়ার প্রক্রিয়ায় কুশীলবই শুধু নয়, নাটের গুরু জিয়াউর রহমান। তার তৈরি করা দল ও তার জোটের কাছ থেকে বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের লম্পঝম্প দেখতে হচ্ছে।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টি। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কথা বলা যায় না। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান থাকতো। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হতো এ ভূখন্ড।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশের যে অভিযাত্রা, সেই অভিযাত্রায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার প্রতিষ্ঠার শেষ আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা। তাঁকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ থাকবে না।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ও দৈনিক ভোরের আকাশ-এর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষালের সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহসভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, সহসভাপতি রোকেয়া প্রাচী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিন জাহান প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট আইনজীবী ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক কামরুন নাহার বেগম, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান ও নাট্যব্যক্তিত্ব লাকী ইনাম ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top