চরফ্যাশনে মধুমতি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

PicsArt_06-09-09.58.31.jpg

চরফ্যাশনে মধুমতি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে
দুদকের মামলা

সাগর চৌধুরীঃ আসামী (১) রেজাউল কবির (৪৬), সাবেক ব্যবস্থাপক (বর্তমানে বরখাস্তকৃত), মধুমতি ব্যাংক লি., চরফ্যাশন শাখা, ভোলা, পিতা: আবু তাহের, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা- হাসপাতাল রোড, ৩ নং ওয়ার্ড, পৌর নবীপুর, ডাকঘর: ভোলা-৮৩০০, থানা- ভোলা সদর, জেলা- ভোলা।

৫ টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে সর্বমোট ২,৭৭,৩০,৬৪০/- টাকা আত্মসাৎ করে দন্ডবিধির ৪০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় এবং (২) সাহাবুদ্দিন (৩২), সাবেক এসিস্টেন্ট অফিসার ও ক্যাশ ইন চার্জ (বর্তমানে বরখাস্তকৃত), মধুমতি ব্যাংক লি:, চরফ্যাশন শাখা, পিতা- আ: গনি, গ্রাম: চর নুরুল আমিন, ডাকঘর: মুন্সির হাট, থানা- চরফ্যাশন, জেলা- ভোলা উক্ত আত্মসাতে রেজাউল কবিরকে সহায়তা করে দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে পরিলক্ষিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

মামলা নং: ১, তারিখ ১৫.৭.২০২১
সজেকা বরিশাল
বাদী:দেবব্রত মন্ডল, উপপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, বরিশাল।

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এই যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, চরফ্যাশন ভোলা এর যৌথ স্বাক্ষরে মধুমতি ব্যাংক লি:, চরফ্যাশন শাখা, ভোলায় পরিচালিত ৫ টি হিসাবে সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ বিভিন্ন সময়ে বিল ও চেকের মাধ্যমে জমা করা হত এবং উত্তোলন করা হত।

উক্ত হিসাব ৫ টি তে যে পরিমাণ অর্থ বিল বা চেকের মাধ্যমে জমা হওয়ার উচিত ছিল তা কখনও হয়নি। শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির উক্ত বিল/চেকের অর্থ অন্যান্য ব্যাংক থেকে নগদে কালেকশন করিয়ে এনে নিজের কাছে রাখতেন। কালেকশনকৃত অর্থ হতে হিসাব সমূহে বিলের সমপরিমাণ অর্থ জমা না করে বিভিন্ন সময়ে তিনি আংশিক অর্থ নগদে জমা করেছেন এবং বাকি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। হিসাব হতে অর্থ উত্তোলন করার জন্য গ্রাহক/বাহক কর্তৃক চেক উপস্থাপন করা হলে হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকলে ক্যাশ ইন চার্জ সাহাবুদ্দিন গ্রাহক/বাহক কে জানাতেন না বরং শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিমকে অবহিত করতেন। তখন শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম ক্যাশ ইন চার্জ সাহাবুদ্দিন এর সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট হিসাবে নগদ অর্থ জমা করতেন এবং ক্যাশ ইন চার্জ সাহাবুদ্দিন চেকে বর্ণিত অর্থ বাহককে প্রদান করতেন।

অনুসন্ধানকালে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ নামীয় হিসাব নং- ১১৪১৩৫০০০০০০২২ এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, চরফ্যাশন, ভোলার ২ টি বিলে মোট ১,২৪,৪৬,৬৪০ টাকা জমা হওয়া উচিত ছিল কিন্তু তা হয়নি। শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির উক্ত বিল দুটির অর্থ সোনালী ব্যাংক থেকে নগদে কালেকশন করিয়ে এনে নিজের কাছে রাখেন এবং উক্ত হিসাবে তিনি বিভিন্ন তারিখে নগদে সর্বমোট ৮৯,৪৬,৬৪০/- টাকা জমা করেন তাই উক্ত হিসাব হতে আত্মসাতকৃত অর্থের পরিমাণ = ৩৫,০০,০০০/- টাকা।

একইভাবে শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা উন্নয়ন কর্মসূচী নামীয় হিসাব নং- ১১১১৪১১১০০০০০৩৩৭ এ ২টি বিলের মোট ১৫৯৩৪৭২১ টাকা জমা না করে বিল দুটির অর্থ সোনালী ব্যাংক থেকে নগদে কালেকশন করিয়ে এনে নিজের কাছে রাখেন এবং উক্ত হিসাবে তিনি বিভিন্ন তারিখে নগদে সর্বমোট ৭০৩৪৫৯৯/- টাকা জমা করেন।

তাই উক্ত হিসাব হতে তার আত্মসাতকৃত অর্থের পরিমাণ = ৮৯,০০,১২২/- টাকা। এছাড়া গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) উন্নয়ন কর্মসূচী নামীয় হিসাব নং- ১১১১৪১১১০০০০০৩৩৮ এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, চরফ্যাশন, ভোলার ২ টি বিলে মোট ৯১১৪৪৯০/- টাকা জমা হওয়া উচিত ছিল কিন্তু শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির উক্ত বিল দুটির অর্থ কালেকশন করে নিজের কাছে রেখে উক্ত হিসাবে বিভিন্ন তারিখে নগদে সর্বমোট ৪২২১৩১৪/- টাকা জমা করেন। তাই তার আত্মসাতকৃত অর্থের পরিমাণ = ৪৮,৯৩,১৭৬/- টাকা।

একইভাবে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার কাজ ও গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন টিআর. কর্মসূচী ১ম ২য় নামীয় হিসাব নং- ১১১৪১২১০০০০০১১৪২ এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, চরফ্যাশন, ভোলার ১১ টি বিলের মাধ্যমে মোট ৪৪৬৩৬০৯৬/- টাকা জমা হওয়া উচিত ছিল কিন্তু রেজাউল কবির উক্ত বিলগুলোর অর্থ সোনালী ব্যাংক থেকে নগদে কালেকশন করিয়ে এনে নিজের কাছে রাখেন এবং উক্ত হিসাবে বিভিন্ন তারিখে নগদে সর্বমোট ৪১৩৬৮৭৫৪/- টাকা জমা করেন। তাই উক্ত হিসাব হতে রেজাউল কবিরের আত্মসাতকৃত অর্থের পরিমাণ (৪৪৬৩৬০৯৬ – ৪১৩৬৮৭৫৪) = ৩২,৬৭,৩৪২/- টাকা।

এছাড়া জমি আছে ঘর নাই গৃহ নির্মাণ প্রকল্প নামীয় হিসাব নং- ১১১৪১২১০০০০০১০৯৫ এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, চরফ্যাশন, ভোলার ৩ টি চেকের মাধ্যমে সর্বমোট ৪৫২৪৯৮০০/- টাকা জমা হওয়া উচিত ছিল কিন্তু শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির উক্ত চেকের অর্থ ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে নগদে কালেকশন করিয়ে এনে নিজের কাছে রাখেন এবং উক্ত হিসাবে তিনি বিভিন্ন তারিখে নগদে সর্বমোট ৩৮০৭৯৮০০/- টাকা জমা করেন।

তাই উক্ত হিসাবের মাধ্যমে আত্মসাতকৃত অর্থের পরিমাণ (৪৫২৪৯৮০০৬ – ৩৮০৭৯৮০০) = ৭১,৭০,০০০/- টাকা। তাই রেজাউল কবির, সাবেক ব্যবস্থাপক, মধুমতি ব্যাংক লি:, চরফ্যাশন শাখা, ভোলা উক্ত শাখার ক্যাশ ইন চার্জ সাহাবুদ্দিনের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, চরফ্যাশন ভোলা এর যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত ৫ টি হিসাব হতে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে সর্বমোট = ২,৭৭,৩০,৬৪০/- টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top