বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন দুই ডেপুটি গভর্নর পেতে যাচ্ছে
অর্থনৈতিক প্রতিবেদকঃ ২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির পর আবুল কাশেম ও নাজনীন সুলতানাকে অপসারণ করা হয়। এরপর থেকেই খালি পড়ে আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের স্থায়ী তিনটি পদের একটি ও অস্থায়ীভাবে সৃষ্ট ৪র্থ পদ।
নতুন গভর্নরের প্রার্থীদের তালিকায় আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ব্যাংকটির মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম, কাজী সাইদুর রহমান, হুমায়ুন কবির, মো. শাহ আলম ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া। এর মধ্যে কাজী সাইদুর রহমান ও আলী হোসেন প্রধানিয়া চূড়ান্ত তালিকায় আছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর পদের জন্য গত বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ১১টি আবেদন জমা পড়েছিল। তাদের মধ্য থেকে প্রার্থীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরির কথা অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমানের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটির।
কোভিড ১৯-এর কারণে অনলাইনে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল কমিটি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তিতে তা পিছিয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ সরাসরি হওয়া বাঞ্ছনীয়। তখন এই বাধ্যবাধকতা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় সার্চ কমিটি।
এ প্রসঙ্গে সার্চ কমিটির সদস্য ড. জায়েদ বখত বলেন, ‘কিছু কারণে সার্চ কমিটির মিটিং হয়নি। ফলে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হয়নি। সরকার চাইলে সার্চ কমিটিকে পাশ কাটিয়েও সরাসরি নিয়োগ দিতে পারে। সার্চ কমিটিও গঠন করেছিল সরকার। করোনাভাইরাসের কারণে যেহেতু এই কমিটি বসতে পারছে না, আবার দীর্ঘদিন ধরে পদও খালি, সে কারণে হয়তো সরকার সরাসরি নিয়োগ দিতে চাইছে।’
সার্চ কমিটিকে বাদ দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের একাংশ আপত্তি জানিয়েছেন।
অবশ্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটা অস্বাভাবিক নয়। সার্চ কমিটি থাকার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি আরও জানান, যেহেতু এটি একটি চুক্তিভিত্তিক পদ, তাই নিয়ম অনুযায়ী সরকারের পক্ষে প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে অর্থ মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকে ডেপুটি গভর্নর হিসেবে এর আগে একবার চারজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে দুজন ডেপুটি গভর্নর আছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ পদে নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রথমবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের সার্চ কমিটি ছয়জনের মৌখিক পরীক্ষা শেষে তিনজনের নাম প্রস্তাব করে।
সেখান থেকে নিয়োগ না দিয়ে ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।