ডিবির জালে পড়লো ধরা পড়ল ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী
স্টাফ রিপোর্টঃ নাম জাহিদুল ইসলাম রকি। বয়স ২৫ বছর। পেশা ফেন্সডিল ব্যবসা। কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা চৌদ্দগ্রাম থানার জগমহনপুর এলাকায় বসবাস। ভারত থেকে অবৈধভাবে ফেন্সিডিল সংগ্রহ করে পাইকারি সরবরাহ করেন বিভিন্ন এলাকায়। নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট পৌঁছে দেন ফেন্সিডিল। তবে নিজে থাকেন অধরা। ফোনে অর্ডার নেন। অবশ্য পেশা যাই হোক বিশ্বস্থতা আছে। ব্যবসায় বিশ্বস্থতা না থাকলে কি চলে?
হ্যাঁ তিনি ব্যবসায় ইতোমধ্যে বেশ বিশ্বস্থতা অর্জন করেছেন। কারণ তিনি অগ্রিম টাকা নেন না। অর্ডার অনুযায়ী ফেন্সিডিল পৌঁছে দিয়ে তারপর হাতে হাতে টাকা নেন। দামটাও একটু বেশি নেন এ কারণে। বেশ কয়েক জন ফেন্সডিল ব্যবসায়ীকে আটক করে তাদের নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিশ্চিত হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
তারপর চলে গ্রেফতারের পরিকল্পনা। ফোনে যোগাযোগ করা হয় ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী পরিচয়ে। তারপর কথায় কাজে মিল পেয়ে অর্ডার নেন জাহিদুল ইসলাম রকি। ১২০০ টাকা প্রতি পিচ ফেন্সিডিল দাম ঠিক করে অর্ডার দেয়া হয় ৫০০০ পিচ এর। হাতে পৌঁছে দিয়ে টাকা নিবেন। তবে আগে থেকে জানাবেন না কোথায় হস্তান্তর হবে। সে অনুযায়ী গতকাল ৮ জুলাই রাত আটটায় ফেন্সিডিল হস্তান্তরের জন্য নির্ধারণ হয়। তিনবার স্থান পরিবর্তন করে শেষে সিদ্দিরগঞ্জ থানাধীন পুল এলাকায় এমএস টাওয়ারের সামনে একটি প্রাইভেট কারসহ আসেন তিনি। ছদ্দবেশে প্রস্তুত ডিবি টিম। কোন সন্দেহ করতে পারেননি তিনি। এসেই সরি বলে স্বীকার করেন চাহিদা অনুযায়ী মাল আনতে পারেননি। ১৭৫ পিচ ফেন্সিডিল এনেছেন যা গাড়ীতে আছে। তার নির্দেশে গাড়ীর চালক সোহেল মিয়া (২৬) গাড়ি থেকে ফেন্সিডিল দেখান।
এবার টাকা প্রদানের পালা। গাড়ি থেকে ফেন্সিডিল নামবে মূল্য পরিশোধ হলে। ডিবি পুলিশের টাকা প্রস্তুত, সাথে হতকড়াও ছিল প্রস্তুত। রাত সাড়ে আটটায় যে হাতে ফেন্সিডিল এর টাকা নেয়ার কথা সে হাত বাঁধা হয় হতকড়ায়। এবার আর বুঝতে বাকি থাকেনা জাহিদুল ইসলাম রকি ও সোহেল মিয়ার। উপস্থিত আশপাশের লোকজনের সম্মূখে গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১৭৫ পিচ ফেন্সিডিল। জব্দ করা হয় ফেন্সিডিল বহনে ব্যবহৃত গাড়িটি।
অভিযান পরিচালিত হয় নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, পিপিএম (বার) এর দিক নির্দেশনায়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ডিবির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর এসএম আলমগীর হোসেন, এসআই মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, এসআই মোঃ সিরাজ উদ্দৌলা ও সংগীয় ফোর্স অভিযানে অংশ নেয়। আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে সিদ্দিরগঞ্জ থানায়। আসামিদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে নেয়া হচ্ছে পরবর্তী ব্যবস্থা। পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ মহোদয়ের নির্দেশনায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে এ ধরণের অভিযান চলবে সব সময়। মাদকের সাথে যেই জড়িত হোক তার সাথে নেই কোন আপোষ।
পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ মহোদয়ের স্পষ্ট ঘোষণা “হয় মাদক ব্যবসা ছাড়ো, না হয় জেলখানায় থাকো”।