জাতীয় সংসদের আসন ৫০০ করার সুপারিশ

Picsart_24-01-09_10-32-43-586.jpg

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে চার মাস, ‘না’ ভোটের প্রচলন, গণভোট, ব্যালটের পাশাপাশি অনলাইন ভোটিং সিস্টেমের প্রস্তাব

বিশেষ প্রতিবেদকঃ দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদে ৫০০ আসন করার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন। এছাড়া জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্ন কক্ষের সংসদ সদস্য এবং সব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা সুপারিশ করেছে কমিশন। নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার বিধান করার সুপারিশও রয়েছে। 

এছাড়া সংবিধান সংশোধন করে স্থায়ী ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই জাতীয় কাউন্সিলের হাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অন্যান্য ২০ জন উপদেষ্টা, নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা রাখার সুপারিশ দিয়েছে এই সংস্কার কমিশন। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস এবং এই সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছে ইসি সংস্কার কমিশন। রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।

এদিকে আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ধরে অক্টোবরের মধ্যে যেসব প্রবাসী ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে তাদের পোস্টাল ব্যালটের মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ‘অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা’ চালুর সুপারিশ করেছে ইসি সংস্কার কমিশন। কোনো আসনে মোট ভোটারের ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচন; জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘না ভোটের’ বিধান প্রবর্তন এবং ‘না ভোট’ বিজয়ী হলে নির্বাচন বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণভোটের বিধান আগামী সংসদে পাস করে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন(ইসি)কে নির্বাচন স্থগিত এবং পুর্ননির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে। এছাড়া যারা ২০১৮ সালের জালিয়াতি ও ২০১৪ এবং ২০২৪ সালের একতরফা-পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। তাদের তদন্তসাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে কমিশনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে রেফারেন্স পাঠিয়ে ৯০ দিনের জন্য নির্বাচন স্থগিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশ যত প্রস্তাব:
রাষ্ট্রপতি: দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করার বিধান করা; জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার বিধান করার সুপারিশ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী :সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সীমিত করা; সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দুইবার নির্বাচত প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য করা ও একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যাতে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন তার বিধান করার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে ইসি সংস্কার কমিশন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার: তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মেয়াদ চার মাস নির্ধারিত করা এবং এর মেয়াদকালে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে সরকার পরিচালনায় রুটিন কার্যক্রমের বাইরেও সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি-বিধানের সংস্কার এবং প্রশাসনিক রদবদলের ক্ষমতা প্রদানের বিধান করা। স্থায়ী জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের নাম চূড়ান্ত করা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানসহ অন্য ২০ জন উপদেষ্টাকে নিয়োগ দেওয়া।

সংবিধান সংশোধন কমিশন প্রদত্ত স্থায়ী জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের সুপারিশ গৃহীত না হলে, সব রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা এবং ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক তা বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: রাজনৈতিক দলসমূহের কেবল দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার বিধান করার সুপারিশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার বিধান করার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে।

নির্বাচনের সার্টিফিকেশন: জাতীয় নির্বাচনের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের আগে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা ও সঠিকতা ‘সার্টিফাই’ করা এবং গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা জনগণকে অবহিত করার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে।

নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা এবং গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো রাজনৈতিক দল সংক্ষুব্ধ হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ করার সুযোগ সৃষ্টির বিধান করার কথা বলা হয়েছে।

আরও সংবাদ পড়ুন।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন থাকবে কি না ‘সময় বলে দিবে’: সিইসি

আরও সংবাদ পড়ুন।

একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য: সিইসি

আরও সংবাদ পড়ুন।

জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা

আরও সংবাদ পড়ুন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ – আরও ১০টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত

আরও সংবাদ পড়ুন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ – দুই দিনে মোট ২৯টি সংসদীয় কমিটি গঠন হলো

আরও সংবাদ পড়ুন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৮৫ জন প্রার্থী বৈধ প্রার্থী – ৭৩১ অবৈধ

আরও সংবাদ পড়ুন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ২৯টি দল, নির্বাচনে বিএনপিসহ ১৫ দল বাইরে

আরও সংবাদ পড়ুন।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর; ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

আরও সংবাদ পড়ুন।

গণতন্ত্রের চেয়ে নির্বাচনের গুরুত্ব বেশি, ডিসি-এসপিদের সিইসি

আরও সংবাদ পড়ুন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসির প্রয়োজন ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা

আরও সংবাদ পড়ুন।

জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন – নইলে অরাজকতা হবে – ইসি আলমগীর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top