লব্ধ
ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে
এতোই ক্লান্ত হয়েছি
আজ আর লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না –
অথচ কবিতারা ২৭ নম্বর পার্টি অফিসের মতো ভীড় করছে
চোখের দরজা-জানালায়
স্টেডিয়াম সদস্যদের চেয়ারের মতো ধুলোজমে ববর্ণ হয়ে আছে, ভীড়ের লোকেরা চেয়ারের দিকে হামাগুড়ি দিয়ে এগুতে থাকে তাদের কপাল-ঘাড়-চিবুক বেয়ে কবিতার শব্দগুলো দরদর ঝরে!
কোনটা কুড়িয়ে আঁচলে বাঁধবো,কোনটা ধুলো-বালি ঝাড়ার মতো ফেলে দেবো
ভাবতে ভাবতে চলতে চলতে দেখি আমিই চেয়ারের কাছে-
পাশ থেকে একটা বিশাল সাইজের তেলাপোকা এমন তেডে
এলো, আমি কোমর বাঁকিয়ে কোনমতে তাল রক্ষা করি-
স্টেডিয়াম সদস্যদের চেয়ারে বসা যাবে না!
তেলাপোকা মারার জন্য হাত উঁচু করেও নামিয়ে নিয় কারণ আশেপাশে কোথায় বেসিন নেই, অশিক্ষিত তেলাপোকার জীবন পরিক্রমা আমার চেয়ে সহজ,তারা যে কোন পরিস্থিতিকে সামলে দিব্যিই নিজের খাবার সংগ্রহ করে বেঁচে যায়!
লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যায়-
হায় জীবন! তেলাপোকাও হতে পারলাম না!
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ যন্ত্রণায় মুখ বাঁকা করার সাথে সাথেই হো হো হো হেসে উঠলো সর্বনিম্ন বিদ্যাপিঠ!
কী! তুমি যাকে চোখ দিলে সে আজ অন্ধ
আমি যাকে চোখ দেয়ার চেষ্টা করলাম
তার চোখ স্বচ্ছ,টলটলে!
আস্তে বলি ইতিহাস সাক্ষ্য দিও!
তেলাপোকার ডানায় উড়তে উড়তে উড়তে একেবারেই চিলের কাছে গেলাম!
চিলের চারপাশে অজস্র তেলাপোকা,
ভাবলাম এতো তেলাপোকা কেন এখানে-
চিল যখন ডানা মেললো দেখি আমিও তেলাপোকার মতো
চঞ্চলচোখে হাতদুটোকে শূড় বানিয়ে কত যে –
কী বলতে লাগলাম!
চিল ততোধিক জোরে ঘাড় নেড়ে না না না করতে লাগলো,
কবিতার শব্দগুলো চেইনবোমার মতো এক দুই তিন ফুটতে লাগলো!
কখন যে নিজেই ক্রাস হয়ে গেলাম! ছিন্নভিন্ন টুকরোগুলো আনোয়ারের টুকরোর মতো হলুদ-মরিচ মাখানো- ভাবলাম রান্না চড়িয়ে দিক পারুলখালা!
কিন্তু কোথা থেকে রাত নেমে এসে বলে-
যৈবতী কন্যা জলে গা ভাসিয়ো না, জ্বর হবে
শাওন মাসের নাওলো কিশোরকে খুঁইজে বাইর করো-
শাহানা সিরাজী
কবি প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক।