গঙ্গাপুরের সাবেক মেম্বার গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ; ধর্ষকের শাস্তি দাবি এলাকাবাসীর

Picsart_23-04-19_19-23-53-999.jpg

গঙ্গাপুরের সাবেক মেম্বার গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ; ধর্ষকের শাস্তি দাবি এলাকাবাসীর

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধিঃ ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে ১১ বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশু ছত্রী ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত গোলাম মাওলা (৪০) ২ সন্তানের জনক। তিনি গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। তার পিতার নাম সামছুদ্দিন (সামছু হাজী)।

ধর্ষণের সময় শিশুর আপত্তিকর ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখার অভিযোগ করেছে ভিকটিম। ধর্ষণের শিকার শিশুকে ভয় দেখানো হয়েছে। ঘটনা কাউকে জানালে আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ধর্ষক।

গঙ্গাপুর ইউনিয়নের শাকিরের ভিটায় অবস্থিত গোলাম মাওলার ক্লাবে ওই ঘটনা ঘটে।

ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১২ এপ্রিল (বুধবার) ১১ বছরের এই শিশু কণ্যা ইফতার শেষে সন্ধ্যার পর দোকান থেকে কলা আনতে যাওয়ার পথে অভিযুক্ত ধর্ষক গোলাম মাওলা শিশুর মুখ চেপে তার ক্লাব ঘরে পিছনের দরজা দিয়ে নিয়ে ক্লাবের নির্জন কক্ষে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের শিকার শিশু স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী এবং তার বাবা একজন প্রবাসি। ধর্ষণের শিকার শিশু জানায়, মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে ধর্ষক দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সময়ে নানা প্রলোভন দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করতো।

স্থানীয়রা জানায়, ভিকটিম শিশুটির বাড়ীর রাস্তার পাশে ইটের সেমি পাকা ঘর উত্তোলন করে নিজস্ব ক্লাব খুলে সাবেক এই মেম্বার। ক্লাবের পিছনে একটি রুম তৈরী করে সেখানে খাট-পালঙ্ক পাঠিয়ে দীর্ঘদিন যাবত নানা অপকর্ম করে আসছে। এমনকি এই রুমের পিছন দিয়ে সে একটি দরজা তৈরী করেছে, যাতে করে রাস্তার মানুষ এবং পথচারীরা তার অপকর্ম ধরতে না পারে।

ওই ঘটনার পর থেকে ভিকটিমের পরিবারের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সামাজিকতা ও ধর্ষকের হুমকির ভয়ে তারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানায়নি। তবে ধর্ষক গোলাম মাওলার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষকের বড় ভাই এই ক্লাবে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, সাবেক মেম্বার গোলাম মাওলা এর আগেও তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণ করেছে। এই ঘটনায় ওই তিন সন্তানের জননী দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পাইনি। বরং তার সাজানো সুখের সংসারটি ভেঙে যায়। ধর্ষক গোলাম মাওলার আরো একাধিক নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা এলাকায় সকলেরই জানা রয়েছে।

ওই ঘটনায় অভিযুক্ত গোলাম মাওলার বক্তব্য জানতে চাইলে সে জানায়, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ক্লাব ঘরে আমি আড্ডা দিতাম। আমার বিরুদ্ধে অপবাদ আসার পর আমার ভাই আনোয়ার হোসেন ঘরটিতে তালা মেরে রেখেছে। এই বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত মেম্বার মোশারফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনা আমরা শুনেছি, ধর্ষণের ঘটনার বিচার করা আমাদের আওতার বাইরে।

গঙ্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রিয়াজ এই প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় মেম্বার ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছে। এছাড়াও এই ঘটনার বিষয়ে বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মিয়া (বিপিএম) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভিকটিমের জবানবন্দী নেওয়ার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে, ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট আদেশ মান্য করে ভিকটিমের সামাজিক নিরাপত্তার কারণে ভিডিও এবং ভিকটিমের ছবি সমপ্রচার থেকে বিরত থাকলাম। মহামান্য আদালতের আদেশ পেলে ভিডিও এবং স্থীরচিত্র প্রদর্শন করতে বাধ্য থাকব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top