ঢাকায় যাবে ভোলার গ্যাস
বিশেষ প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাসকূপের সন্ধান পাওয়া গেছে পুরনো কথা হলেও ভোলায় অবস্থিত সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (এসজিসিএল) আওতাধীন বাপেক্স শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের উদ্বৃত্ত গ্যাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করবে।
এই গ্যাস কম্প্রেসড করে মাদার-ডটার পদ্ধতিতে ক্যাসকেড সিলিন্ডারে পরিবহন করে ঢাকার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করবে ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড’।
প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ৩০.৫০ টাকা এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৪৭.৬০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসজিসিএলের সাথে ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং’-এর এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান তথা ইন্ট্রাকোর ৩০.৫০ টাকা চার্জের মধ্যে কম্প্রেসন চার্জ ৮ টাকা, পরিবহন চার্জ ২১ টাকা ও ডি-প্রেসারাইজেশন চার্জ ১.৫০ টাকা ধরা হয়েছে।
অন্য দিকে ভোক্তা পর্যায়ে ৪৭.৬০ টাকার মধ্যে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের চার্জ ৩০.৫০ টাকা, ফিড গ্যাসের মূল্য ১৭ টাকা এবং ডিমান্ড চার্জ ১০ পয়সা ধরা হয়েছে।
ফিড গ্যাসের মূল্য ও কম্প্রেসন চার্জ সময়ে সময়ে সরকার তথা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কর্তৃক পুনর্নির্ধারিত হলে ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের মোট মূল্য সমন্বয় করা হবে।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের দু’টি প্রসেস প্ল্যান্টের গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ১২০ এমএমসিএফডি। ওই গ্যাস থেকে আবাসিক খাতে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে সরবরাহের পর ৩৪ এমএমসিএফডি গ্যাস উদ্বৃত্ত থাকে।
এই গ্যাস ঢাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু ও নিরাপদে পরিবহন ও বিতরণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে গ্যাস পরিবহনের ৯টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ভোলা থেকে গ্যাস কম্প্রেসড অবস্থায় সিলিন্ডারে পরিবহন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহের বিষয়ে ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড’ সর্বপ্রথম এসজিসিএলের কাছে আবেদন করে।
পরবর্তীতে একই বিষয়ে পাঁচটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এ ছাড়া নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য দু’টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
পাশাপাশি ভোলার গ্যাস সিলিন্ডারে করে নৌপথে বার্জের মাধ্যমে পরিবহন করে ঢাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে।
উদ্যোক্তা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাবের তুলনামূলক বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায়, দ্রুততম সময়ে গ্যাস কম্প্রেসড করে সরবরাহ করার লক্ষ্যে অবকাঠামো স্থাপনের জমিসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য যন্ত্রপাতির সক্ষমতা শুধুমাত্র ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের রয়েছে।
এমতাবস্থায় ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের বিদ্যমান সক্ষমতা বিবেচনায় ভোলার উদ্বৃত্ত গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং দ্রুততম সময়ে গ্যাস ঘাটতি শিল্প কারখানায় সরবরাহের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রী) নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ভোলার ইলিশা’য় নতুন কূপে গ্যাসের সন্ধান, দৈনিক ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা
আরও সংবাদ পড়ুন।
বোরহানউদ্দিনে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের টবগী-১ কূপের খনন কাজ শুরু