পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের হাইকোর্ট
আমাদের এ দেশেই থাকতে হবে, বায়ুদূষণ কমাতে পদক্ষেপ নিন।
আদালত প্রতিবেদকঃ রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেছে, ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে আমরা যে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলাম তার ছিটেফোঁটারও বাস্তবায়ন দেখছি না। এমনকি বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। সেসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধেও কার্যকর পদক্ষেপ নাই। এই বায়ুদূষণের মাধ্যমে দেশের মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এই দূষণ বন্ধে যাদের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তারাই সক্রিয় নন। এর পেছনের অন্যতম কারণ হচ্ছে তাদের ছেলেমেয়েরা তো এদেশে থাকে না। কিন্তু আমরা এদেশে থাকি, এ দেশেই আমাদের থাকতে হবে। তাই বায়ুদূষণ কমিয়ে আনতে যা করা দরকার সে ব্যাপারে আপনারা পদক্ষেপ নিন। এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার (৫ফেব্রুয়ারী২০২৩) এ মন্তব্য করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রাজধানী ও এর আশপাশে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নির্দেশ দেন।
ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঐ প্রতিবেদনগুলোতে বায়ুদূষণে ঢাকা শীর্ষ নগরী বলে জানানো হয়। এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ঐ আবেদনে বলা হয়, ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে উচ্চ আদালত ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। কিন্তু এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন না করায় বায়ুদূষণ না কমে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ৩১ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ুদূষণে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই আদেশ মোতাবেক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক সপ্তাহ অভিযান চালিয়ে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কৌঁসুলি আইনজীবী আমাতুল করিম এমন তথ্য উপস্থাপন করলে হাইকোর্ট বলেন, বায়ুদূষণের ফলে পরিবেশ এবং মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে তো কয়েক মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ হবে। আর আপনি বলছেন ৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আদালত আদেশ দিয়েছে নির্দেশনা বাস্তবায়নের। এখন সেটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে বিলম্বের বিষয়টি উল্লেখ করে আদালত বলে, কেন পরিবেশ অধিদপ্তরে পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে না। শুধু সভা করলেই হবে না, দূষণ কমাতে কাজ করতে হবে। মনিব না হয়ে দেশের সেবক হোন। এর পরই হাইকোর্ট ঢাকাসহ আশপাশের পাঁচ জেলায় অবস্থিত সব অবৈধ ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার শুনানি করেন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।