প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা – ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার দিলেন
আজ বুধবার (১২ অক্টোবর২০২২) এই পুরস্কার তুলে দেন তিনি। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ও অনুকরণীয় অবদান রাখায় ১৪২৫ বঙ্গাব্দের জন্য ১৫ এবং ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য ২৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার দেওয়া হলো।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানস্থলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
১৪২৫ বঙ্গাব্দে পুরস্কার পেলেন ১৫ জন। এরমধ্যে স্বর্ণপদক পেয়েছেন একজন। তিনি হলেন বগুড়ার শেরপুরের প্রাণিসম্পদ দফতরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রায়হান। কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণামূলক কাজে তিনি এই পদক পেয়েছেন।
রৌপ্যপদক পেয়েছেন সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এরা হলেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন বা ব্যবহার ক্যাটাগরিতে পিরোজপুরের নাজিরপুরের বদরুল হায়দার বেপারী ও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হামিদুল হক। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারে কৃষিতে নারীর অবদানের ক্ষেত্রে ঝিনাইদহ সদরের শারমিন আক্তার, প্রতিষ্ঠান বা সমবায় বা কৃষক পর্যায়ে উচ্চমানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ ও নার্সারি স্থাপনে অবদানের জন্য পাবনার আটঘরিয়ার দুলাল মুখা।
বাণিজ্যিকভিত্তিক খামার স্থাপনে সাভারের কোব্বাদ হোসাইন ও রাজশাহীর গোদাগাড়ির মনিরুজ্জামান মনির এবং প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে পদক পাচ্ছে প্যারামাউন্ট এগ্রো লিমিটেড।
ব্রোঞ্জপদক পেলেন সাত জন। এরা হলেন, কৃষি গবেষণায় রাজশাহীর তানোরের নুর মোহাম্মদ, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন বা ব্যবহার ক্যাটাগরিতে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার বারেক হাওলাদার, কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণামূলক কাজে রংপুরের বুড়িহাটের হর্টিকালচার সেন্টারের মজিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের শফিকুল ইসলাম, নওগাঁর পোরশা উপজেলার গৌতম কুমার সাহা, রাজশাহীরর পুঠিয়ার মোছা. পূর্ণিমা বেগম ও ঢাকার নবাবগঞ্জের নিপু ট্রেডার্স।
১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে স্বর্ণপদক পেয়েছেন দুই জন। এরা হলেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি/উদ্ভাবন/ব্যবহার ক্যাটাগরিতে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি চাষে পাবনার ঈশ্বরদীর আমিরুল ইসলাম।
রৌপ্যপদক পেয়েছেন ৯ জন। এরা হলেন, ঢাকার শেরেবাংলা নগরের মুহাম্মদ রকিবুল আহসান রনি, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন, খুলনার খালিশপুরের হালিমা বেগম, যশোরের ঝিকরগাছার নাসরিন সুলতানা, সিলেটের আব্দুল হাই আজাদ বলা, মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার রফিকুল ইসলাম, খুলনার ডুমুরিয়ার আবুল হোসেন সরদার, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর বাবুল হোসেন।
ব্রোঞ্জপদক পেয়েছেন ১৮ জন। এরা হলেন, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবার রহমান, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের মকবুল হোসেন, সিরাজগঞ্জের সহিদুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির মহালছড়িরর হ্লাশিং মং চৌধুরী, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গাজী মামুদ, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের মাহবুবুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের রিনা বেগম, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোমরেজ আলী, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোস্তম আলী, পাবনার ঈশ্বরদীর শাহীনুজ্জামান, বান্দরবানের তোওয়াব্রোয়াও ম্রো, ফেনীর মজিবুল হক, মুন্সীগঞ্জের সিরাজ খান, টাঙ্গাইলের মধুপুরের ছানোয়ার হোসেন, রাঙ্গামাটির রাজস্থলির আবদুল আউয়াল, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের শাকিল মিয়া, নড়াইলের তনিমা আফরিন এবং দিনাজপুরের রাখী দে।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের সনদপত্র, পদক ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। স্বর্ণপদক প্রাপ্তরা এক লাখ টাকা, রৌপ্যপদক প্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা ও ব্রোঞ্জপদক প্রাপ্তরা ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এ পুরস্কার প্রবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর পরবর্তী সরকারগুলো এ পুরস্কার বাতিল করে। কিন্তু ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত পুরস্কারটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার তাহবিল আইন-২০০৯’ গঠন করে। এই সেক্টরের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন, ২০১৬’ প্রণয়ন করা হয়েছে।