সাভারের ইউএনও মাজহারুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে মামলা

Picsart_22-09-10_19-53-24-735-scaled.jpg

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম।

অপরাধ প্রতিবেদকঃ নিয়মবহির্ভূত ভাবে সিনিয়র অধ্যক্ষ বাদ দিয়ে জুনিয়রকে সাভার মডেল কলেজের দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনায় ঢাকার সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক কলেজ শিক্ষক।

সাভার মডেল কলেজের সিনিয়র অধ্যক্ষ মো. মিরাজুল ইসলাম এ মামলা করেন। শনিবার সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।

মামলার বাদী মিরাজুল ইসলাম বলেন, সাভার মডেল কলেজের অধ্যক্ষ পদ খালি হওয়ার পর ইউএনও মাজহারুল ইসলাম আমাকে বাদ দিয়ে জুনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন রানাকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। পরে এ বিষয়ে আমি আদালতে রিট পিটিশন করলে হাইকোর্ট ইউএনওর দেওয়া নিয়োগ সিদ্ধান্ত স্থগিত করে সর্বোচ্চ সিনিয়র হিসেবে আমাকে কলেজ অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। প্রায় দেড় মাস দায়িত্ব পালনের পর ইউএনও আবার আমাকে বাদ দিয়ে জুনিয়র শিক্ষক ও বাংলার প্রভাষক দিলারা খানকে নিয়োগ দেন, যা আদালত অবমাননার শামিল। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতের সিদ্ধান্ত অবমাননার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী গাজী এইচএম তামিম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট আইনে বলা আছে- অধ্যক্ষের অনুপস্থিতে কোনো প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন। এ সিনিয়রিটি দেখা হবে এমপিওভুক্তির তারিখ অনুযায়ী। যে আগে এমপিওভুক্ত হয়েছেন তাকে সিনিয়র হিসেবে গণ্য করা হবে। যদি এমপিওভুক্তি একই তারিখে হয়, তবে চাকরিতে যোগদানের তারিখ হিসেবে জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে নিয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, সব শর্তের ভিত্তিতেই অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম সাভার মডেল কলেজের সব শিক্ষকের চেয়ে সিনিয়র। আইনগতভাবেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া তার অধিকার। কিন্তু বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে থাকা সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম আইন ভঙ্গ করে মোহাম্মদ হোসেন নামে একজন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। এটার বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করি।

এই আইনজীবী আরও বলেন, রিট পিটিশনে নিয়োগ দেওয়া মোহাম্মদ হোসেনকে অবৈধ ঘোষণা করে মিরাজুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়ার আদেশ দেন আদালত। কিন্তু ইউএনও আবার উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে দিলারা খানম নামে একজন জুনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। বিষয়টি আদালত অবমাননার শামিল। আগামী ২৩ আগস্ট মামলাটির শুনানি হবে।

সাভার মডেল কলেজে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্বে থাকা দিলারা খানম বলেন, কলেজের সভাপতি হিসেবে ইউএনও আমাকে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ীই আমি এখন দায়িত্ব পালন করছি। এ বিষয়ে আইনগত কোনো বিধিনিষেধ থাকলে বিষয়টি ইউএনও ফেস করবেন। এখানে আমার কোনো মতামত নেই।


এ বিষয়ে ইউএনও মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, সাভার মডেল কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় সব কাগজপত্র পর্যালোচনা করে। এ ঘটনায় কলেজের অন্য এক শিক্ষক এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তবে আদালতে আমার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হবে এবং শুনানি শেষে আদালত যে সিন্ধান্ত দেবেন, সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top