ইমরান খান হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিপদে পড়লেন – তসলিমা নাসরিন
ইমরান খান হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিপদে পড়লেন। তিনি হাসিনার মতো তালেবানদের বন্ধু হয়েছিলেন, ভেবেছিলেন তালেবানদের বন্ধু হলে বুঝি আর্মির বন্ধু হওয়ার দরকার পড়বে না। কিন্তু না, পাকিস্তানে আর্মিকে মধ্যম আঙুল দেখালে তার শাস্তি ভোগ করতে হয়। আর বোধহয় তিনি ক্ষমতার কুরসিতে আরোহন করতে পারবেন না। বেচারা। অক্সফোর্ডে পড়েছেন, ইউরোপীয় মেয়েদের সঙ্গে প্রেম করেছেন, বিয়ে না করে প্রেমিকাদের সঙ্গে শুয়েছেন, রক্ষণশীলতার ধারে কাছে নেই, চূড়ান্ত আধুনিক স্মার্ট লোকটি ধর্মের ধ-ও মানেননি কোনওদিন, দাড়ি রাখেননি, টুপি চড়াননি, ভেবেছিলাম ক্ষমতায় এলে এই লোক বোধহয় পাকিস্তানকে মানুষ বানাবেন, সভ্য, শিক্ষিত এবং সেক্যুলার বানাবেন। তা নয়, তিনি উন্নতমানের রাজনীতি না করে নিম্নমানের রাজনীতি শুরু করলেন। ভারত বিরোধিতা, আমেরিকা বিরোধিতা, মুক্তচিন্তা বিরোধিতা শুরু করলেন। এত নারীসঙ্গ লাভের পর নারীর প্রতি ধর্মান্ধদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণ করে রাখলেন। এত যে ভয়ংকর ব্লাসফেমি আইন বহাল আছে দেশে, যে আইনে অমুসলিমদের ফাঁসিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সেই আইনটি নিজের শাসনামলে বাতিল করেননি। কী ঘোড়ার ডিমটা করেছেন তিনি! যে লোক ইহুদি সুন্দরীর প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিলেন, সেই লোকের কতটা অধঃপতন হলে দুনিয়ার সব জিন-ভুতে কুসংস্কারে বিশ্বাস করা এক আপাদমস্তক বোরখাওয়ালিকে বিয়ে করতে পারেন!
ইমরান খানের ফ্যামিলি ভালো। দান করার হাত বড় ছিল তাঁর বাবার। ইমরান খান সম্ভবত ভালো কাজ একটিই করেছেন জীবনে, সেটি হলো তাঁর মায়ের নামে বিশাল বড় একটি ক্যান্সার হাসপাতাল বানিয়েছেন।
তসলিমা নাসরিন
লেখক কবি