ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১ হাজার ৬০০ প্রার্থী বিনা ভোটে পাশ করেছেন

20211110_203243.jpg

পাঁচ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোট ছাড়াই পাশ ১৬০০

বিশেষ প্রতিবেদকঃ তৃণমূলের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাশের হিড়িক পড়েছে। এ পর্যন্ত পাঁচ ধাপের ৩ হাজার ৭৫৩টি ইউপির ভোটে তিন পদে প্রায় ১ হাজার ৬০০ প্রার্থী বিনা ভোটে পাশ করেছেন।

এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৫৪ জন, সাধারণ সদস্য (মেম্বার) ৮৫৮ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৩৬৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও আগামী ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে আরো ২১৯টি ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যা বাড়বে বলে জানিয়েছেন ইসির সংশ্লিষ্টরা।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত ৩৫৪ জনের মধ্যে ৩৫৩ জনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী। দ্বিতীয় বারের মতো ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হলেও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্দলীয়ভাবে ভোট হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি এবারের ইউপি ভোট বর্জন করেছে। তবে দলটির নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ১৪টি ইউপির চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বার পদে সবাই ভোট ছাড়াই পাশ করেছন। ঐ উপজেলায় কোনো ভোট লাগেনি।

একই অবস্থা কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পাঁচটি ইউপিতে। সেখানেও সব কয়টি পদে ভোট ছাড়াই পাশ করেছেন প্রার্থীরা। শরীয়তপুরে একটি ইউপিতে একই ঘটনা ঘটে। এবারের ইউপি ভোটে প্রভাব বিস্তার, সহিংসতা অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি। এই পর্যন্ত ভোট সহিংসতায় প্রায় ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৯ ডিসেম্বর ছিল এই ধাপের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। মাঠ পর্যায় থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য সমন্বয় করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে ইসি। পঞ্চম ধাপে ৯৬টি উপজেলার ৭১৪টি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৫২ জন।

এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ১০৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ২০৭ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৭ হাজার ৮০৪ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৪ হাজার ৮৪৬ জন প্রার্থী ভোটের লড়াই করবেন।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ৮৪২ ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। গত ৬ ডিসেম্বর ছিল চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। চতুর্থ ধাপে ১২০টি উপজেলার ৮৪২টি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৪৮ জন। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ১৩৫ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় ধাপের ১০০০ ইউপির মধ্যে ১০০ জন চেয়ারম্যান ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সদস্য হন ৩৩৭ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য ১৩২ জন। এই ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১০০ জনের মধ্যে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৩টি ইউপির মধ্যে মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮১ জন, সংরক্ষিত নারী সাধারণ সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর দুই দফায় প্রথম ধাপে ৩৬৫টি ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ২০ জুন অনুষ্ঠিত ২০৪টি ইউপির মধ্যে ২৮ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

এছাড়াও ভোট ছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে পাঁচ জন এবং সাধারণ সদস্য হিসাবে ২৯ জন নির্বাচিত হন। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের স্থগিত ১৬১ ইউপির মধ্যে ৪৫ জন চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য সাত জন এবং সাধারণ সদস্য ৪৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top