৯৪ লাখ টাকা হেফাজতে রাখা
দুদক কর্মকর্তা বিরুদ্ধে ৯৪ লাখ টাকা নিজের কাছে রাখার অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ
আদালত প্রতিবেদকঃ জব্দ করা প্রায় ৯৪ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখার অভিযোগ উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার অভিযোগটি শুনানির জন্য উঠলে হাইকোর্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিতে আদালত দুদকের আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, জব্দ করা প্রায় ৯৪ লাখ টাকা কমিশন ও আদালতের কোনো অনুমতি ছাড়া শরীফ উদ্দিন কিভাবে নিজের হেফাজতে রাখল? কোন আইন বা বিধি বলে? বিষয়টি পত্রিকায় আসারপর দুদকের পক্ষ থেকে জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, এর আগে কেনো জমা দেওয়া হয়নি?
জবাবে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, টাকাগুলো জব্দ করেছিল র্যাব। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা যেভাবে রেখেছেন সেভাবেই ট্যাক করা হয়েছে। আমাদের তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা (শরীফ উদ্দিন) পুরো টাকাটা তাদের (র্যাবের) কাছ থেকে নিয়ে চট্টগ্রাম দুদক অফিসে বিভিন্ন আলমারীতে রেখেছেন। গত দু’মাস আগে ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকা দিয়ে একটা সিন্দুক কেনা হয়েছে। সেই সিন্দুকে টাকাগুলো রক্ষিত অবস্থায় আছে। পরে আদালত ওই কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। এ সময় বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা নরুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার শুনানিতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান, ব্যারিস্টার রাকিব হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
‘চট্টগ্রামে দুদক কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি ঘুসের ৯৩ লাখ টাকা’ শিরোনামে গত ৭ অক্টোবর গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয় কক্সবাজারে সার্ভেয়ারের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ঘুসের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা দীর্ঘ দেড় বছর পরও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি। মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা ওই টাকা আদালতের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। জমা দিয়ে তা চালানসহ আদালতকে অবহিত করার কথা। কিন্তু এ সংক্রান্ত মামলার নথি ঘেঁটে এবং সংশ্লিষ্ট আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জব্দ করা টাকা জমা দেওয়া হয়নি।
জব্দ করা প্রায় ৯৪ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়ার বিষয়টি গত সোমবার আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাকিব হাসান। আদালত শুনানি শেষে জব্দ করা প্রায় ৯৪ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, এটা মারাত্মক ঘটনা। এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুর ২টার মধ্যে বিস্তারিত জানাতে দুদককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বদলির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠনের নামে রিট, আদালতের ভুয়া আদেশ তৈরি ও পত্রপত্রিকায় সরবরাহের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে জানাতে বলা হয়।