স্বাস্থ্য মহাপরিচালক গণমাধ্যমে আর কথা বলবেন না
বিশেষ প্রতিবেদকঃ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমে আর কথা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি নিজে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি কথা বলবেন না বলেও জানা গেছে।
গত ৯ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতর করোনা সংক্রান্ত ১০ কমিটি পুনর্গঠন করে। সেখানে আরও নয়টি কমিটির পাশাপাশি গঠন করা হয় তথ্য ব্যবস্থাপনা, গণযোগাযোগ ও কমিউনিটি মবিলাইজেশন বিষয়ক ১৩ সদস্যের কমিটি। সেখানে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস)-এর লাইন ডিরেক্টর ডা. হাবিবুর রহমান ও সদস্য সচিব হিসেবে আছেন কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আখতার।
তবে করোনার এই সময়ে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তাদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এই কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রকৃত চিত্রটাতো আমাদের পক্ষে সবসময় বলা সম্ভব হয় না।
গত ১৮ জুন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে উপস্থিত হয়ে বলেন, দেশের করোনাভাইরাস আগামী এক-দুই বা তিন বছরে যাবে না। এটি দুই থেকে তিন বছর বা তার চেয়েও বেশি স্থায়ী হবে। যদিও সংক্রমণের মাত্রা উচ্চহারে নাও থাকতে পারে। আর সেজন্য সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানান তিনি।
তবে তার বক্তব্যে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের মন্তব্য জনমনে ভীতির সঞ্চার করবে বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা।
সে সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনাভাইরাসের আয়ুষ্কাল নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য মানুষকে হতাশ করেছে। স্পর্শকাতর এ সময়ে দায়িত্বশীল পদে থেকে কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়।’
ওবায়দুল কাদের তখন এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন। ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, বক্তব্যের স্ক্রিপ্টটি দ্রুততার সঙ্গে তৈরি এবং ভালো করে পরীক্ষা না করায় এমনটা হয়েছে।
মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় ভুলের দায় চাপান বক্তব্য লেখকদের ওপর। তিনি বলেন, বক্তব্যের স্ক্রিপ্টটি দ্রুততার সঙ্গে তৈরি করতে বুলেটিনের সময় হয়ে যায় এবং ভালো করে পরীক্ষা করারও সুযোগ হয়নি। সেই স্ক্রিপ্টই বুলেটিনে পাঠ করা হয়। তবে পরে বুঝতে পারি এ বক্তব্যে অস্পষ্টতা তৈরি হতে পারে।