ভোলায় কর্মরত ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের খবরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩ নারী
বিশেষ প্রতিবেদকঃ ভোলায় কর্মরত এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর বিয়ের খবর ময়মনসিংহের গৌরীপুরে তোলপাড় চলছে। স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে শনিবার রাতে এক নারী অবস্থান নেয় ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বাবার ভাড়া বাসায়। আরেক নারী রবিবার গৌরীপুর থানায় ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেন। অপর এক নারীও স্বামী দাবি করায় এ নিয়ে শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই ম্যাজিস্ট্রেটের নাম নাদির হোসেন শামীম।
তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শালীহর গ্রামের আব্দুল কদ্দুসের পুত্র। তিনি ৩৬ তম বিসিএস উত্তীর্ণ হন। বর্তমানে ভোলা জেলায় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে কর্মরত আছেন।
পরিবার ও ভূক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, নাদির হোসেন শামীমের সঙ্গে সাতক্ষীরার এক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। রবিবার (৫ জুলাই) ঢাকায় এ বিয়ে হওয়ার কথা। এ খবর শুনে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে শনিবার (৪জুলাই) সন্ধ্যায় ২৫ ঊর্ধ্ব এক নারী গৌরীপুর পৌর শহরের উত্তরবাজার মহল্লায় নাদির হোসেন শামীমের বাবার ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। ওই নারী এ সময় তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে যান।
অপরদিকে এই ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের খবরে চট্টগ্রামের আরেক নারীও শামীমের স্ত্রী দাবি করেন। ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, তার সঙ্গে মুনশী দিয়ে ধর্মীয় শরিয়া মোতাবেক বিয়ে করে আড়াই বছর ঘর-সংসারও করেছেন। তিনি এ অভিযোগটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা প্রশাসকেও অবহিত করেছেন।
এদিকে রবিবার সকালে গৌরীপুরের আরেক নারী নাদির হোসেন শামীমের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। জেলা প্রশাসক না থাকায় সেই অভিযোগ গ্রহণ করেনি কেউ।
ঘটনা প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বোরহান উদ্দিন জানান, গৌরীপুর উত্তর বাজার এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থান নিয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও ভোলার জেলা প্রশাসক স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের বিচারের আশ্বাস ও মেয়েটিকে ঘটনা এলাকায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, রবিবার আরেকটি মেয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে। তাকে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম জানান, নাদির হোসেন শামীম একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলে জেনেছি। তার বিয়ের খবরে এক মেয়ে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌর কাউন্সিলর মাসুদ মিয়া রতন ও দিলুয়ারা আক্তারকে পাঠানো হয়। এখন জানা গেছে আরো দুইজন মেয়ের সঙ্গে নাদির হোসেন শামীম সাহেব অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তারাও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় নারী কাউন্সিলর দিলুয়ারা আক্তার জানান, মেয়েদের ঘটনা শুনে আমি বিস্মৃত।
কাউন্সিলর মাসুদ মিয়া রতন বলেন, ‘একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে নারীদের এতো অভিযোগ শুনে আমরাও লজ্জিত।’
এ প্রসঙ্গে নাদির হোসেন শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল নাম্বারে কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি। এমন কী, সরকারি মুঠোফোন ০১৭৩৭-০৬৭০৬৬ নাম্বারও বন্ধ রয়েছে। তার ব্যবহৃত ই-মেইল আইডি nhosenshamim@gmail.com এ তথ্য পাঠিয়েও তার মতামত পাওয়া যায়নি।