ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা, মধ্যস্থতা করতে চেয়ে ট্রাম্পের টুইট
আন্তর্জাতিক প্রতিবেদকঃ ভারত-চীন সীমান্তের চলমান সমস্যা সমাধনে মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী আমেরিকা। টুইটারে এমই এক বার্তা দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইট প্রসঙ্গে নয়াদিল্লি এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
পরিস্থিতি যে যথেষ্ট গুরুতর, তা বুঝতে আন্তর্জাতিক মহলের অসুবিধা হচ্ছে না।
ফলে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক শক্তি আমেরিকাও মধ্যস্থতায় আসতে চাইছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ দিন টুইট করেছেন ভারত-চীন সীমান্তের পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা ভারত ও চীন উভয়কেই জানিয়েছি, তাদের সীমান্তে এখন যে সমস্যা চলছে, তার মধ্যস্থতা ও মিমাংসা করতে আমেরিকা প্রস্তুত, ইচ্ছুক এবং সক্ষম।
ভারত-চীন সীমান্ত লাদাখে (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে সম্প্রতি। চলতি মাসের শুরুতে লাদাখে এবং পরে উত্তর সিকিমের নাকু লা অঞ্চলে হাতাহাতিতে জড়িয়েছিল ভারত ও চীনের বাহিনী।
তারপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় এলএসি বরাবর চীন বিপুল সৈন্য সমাবেশ শুরু করার পরে। চীন সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করছে, তাই ভারতও পাল্টা সেনা মোতায়েন শুরু করেছে গালওয়ান উপত্যকায়। তার মাঝেই সামনে এসেছে উপগ্রহ চিত্র, যাতে দেখা গিয়েছে যে, তিব্বতের এক বিমানঘাঁটিতে দ্রুত পরিকাঠামো বাড়াচ্ছে চীন।
ভারত-চীন নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর , ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবারই সর্বোচ্চ পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাদের ডেকে বৈঠক করেন। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং ও নিজের বাহিনীকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ভারত এবং চীনের মধ্যে সীমান্তের কিছু এলাকা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। তবে ১৯৬২-র যুদ্ধ বা ১৯৬৭-র গোলাগুলি বিনিময়ের পর থেকে ভারত-চীন সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োগ প্রায় হয়নি বললেই চলে। ২০১৭ সাল থেকে অবশ্য পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। সে বছর ডোকলামে টানা ৭৩ দিন দু’দেশের বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল। পরে কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে বা সিকিম এবং লাদাখের নানা অংশে এলএসি লঙ্ঘনের চেষ্টা করে চীন উত্তাপ বাড়িয়েছে বার বার। ফলে ডোকলামের ঘটনার বছর তিনেকের মধ্যেই আবার বড়সড় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ভারত-চীন সীমান্তে। এই উত্তেজনা এতটাই উদ্বেগের যে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিতে শুরু করেছেন।
মধ্যস্থতার প্রস্তাব অবশ্য ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এই প্রথম নয়। কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও একাধিক বার মধ্যস্থতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে আমেরিকা। দিল্লি প্রতিবারই জানিয়েছে, কাশ্মীরের বিষয়ে ভারত কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। ডোকলামে যখন চীনের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত, তখনও কারও মধ্যস্থতার অপেক্ষায় ভারত ছিল না। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ বারের টুইট প্রসঙ্গে নয়াদিল্লি এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।