প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সেবাগ্রহীতা নাগরিকদের “স্যার” সম্ভোধন করবেন – দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ
সাগর চৌধুরীঃ আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল -এর গ্লোবাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর (ফ্রাঙ্ক করটেডা) এর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ-এর সাথে পারস্পরিক দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ককে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে স্ব-স্ব কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
এসময় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক ও অক্সফাম যৌথ অংশীদারিত্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকর ও দৃশ্যমান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারে, যাতে জনগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকিত কণ্ঠে প্রতিবাদ করতে পারে। জনগণের দুর্নীতিবিরোধী তীব্র আকাক্সক্ষাই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে।
দেশের ২৬ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অক্সফাম বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের প্রশংসা করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের এই কর্মপ্রক্রিয়ায় অক্সফামের অংশগ্রহণে আমরা খুশি। কমিশন এ জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে সততা ও নৈতিকমূল্যবোধ গ্রোথিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, নৈতিকমূল্যবোধবিহীন উন্নয়ন কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থহীন হয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, কমিশন সমাজের সর্বস্তরে নৈতিকমূল্যবোধ আরো বিকশিত করতে বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অর্ন্তভুক্তিমূলক এ অভিগমনে শুধু অক্সফাম নয় জিও-এনজিও সকলের সক্রিয় অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করি।
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি পরিষেবর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরো বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কমিশন দেশব্যাপী গণশুনানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সেবাগ্রহীতা নাগরিকদের মাঝে একটি মিথস্ক্রিয়া যেমন হচ্ছে, তেমনি সরকারি কর্মকর্তারাও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে আরো সচেতন হচ্ছেন। জনগণের কাছে তাদেরকে প্রত্যক্ষভাবে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। এর মাধ্যমে জনগণই যে রাষ্ট্রের মালিক সেটা প্রত্যক্ষভাবে অনুধাবন করা যাচ্ছে। আমরা চাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সেবাগ্রহীতা নাগরিকদের “স্যার” সম্ভোধন করবেন।
এসময় অক্সফাম প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান , তারাও তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে ত্রাণ, নদী ভাঙ্গণ, পরিবেশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গণশুনানি করে থাকেন। এসব গণশুনানির মাধ্যমে তারা দুর্নীতির অনেক তথ্য পেয়ে থাকেন। এ জাতীয় তথ্য দুদক গ্রহণ করলে, তারা সরবরাহ করতে পারে যা প্রান্তিক পর্যায়ে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়রম্যান বলেন , কীভাবে কমিশন এবং অক্সফাম যৌথভাবে কাজ করতে পারে, প্রথমে এর একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হবে। এই কর্মকৌশলের মাধ্যমে যৌথভাবে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এসময় এই কর্মকৌশল আগামী ২৮ ফ্রেব্রুয়ারির মধ্যে প্রণয়নের জন্য দুদকের মহাপরিচালক প্রতিরোধকে কমিশনের পক্ষে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দুদক মহাপরিচালকের নেতৃত্বধীন একটি টিম এবং অক্সফামের একটি টিম যৌথভাবে এই কর্মকৌশল প্রণয়ন করবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল-এর গ্লোবাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর বলেন, পলিসিসমূহ এমনভাবে প্রণয়ন করা উচিত যাতে পদ্ধতিগতভাবেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের প্রশিক্ষণ ও আইসিটি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, অক্সফাম এর কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপঙ্কর দত্ত, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মাহফুজা আক্তার, সিনিয়র ইনফ্লুয়েনসিং অফিসার মেহবুবা ইয়াসমিন সহ আরও অনেকে।