প্যারিস থেকে লিখছেন রবিশঙ্কর মৈত্রী।
প্যারিসের মেট্রো এবং ট্রাম স্টেশনগুলোর মুখে এবং ল্যান্ডিংয়ে ফলের দোকান মানেই একটুকরো বাংলাদেশের প্রাণ। ভাবতে ভালো লাগে দেশি মানুষের গন্ধ এবং আন্তরিকতাটুকু এইসব দোকান থেকেই পাওয়া যায়। কিন্তু মনে মনে ভীষণ দমে যাই আমি।
স্টেশনে ঢোকার মুখে ছোটো ছোটো ফলদোকানের সামনে দাঁড়ালেই আমি দুঃখলগ্ন কিছু গল্প খুঁজে পাই। শুনতে পাই– বারবার স্বপ্নভাঙার পাথরচাপা কান্নার শব্দ। পাহাড় মরু সাগর পারহওয়া তরুণদের অবদমিত অভিযাত্রার গল্প শুনে আমিও প্রেরণালাভ করি।
ক্রমোন্নত বাংলাদেশের সুখসুবিধাবঞ্চিত এই সকল তরুণদের প্রতি আমার ভালোবাসা শ্রদ্ধা প্রতিদিন বাড়তে থাকে।
আমি বুকের ডান পাশের ব্যথাটাও গোপন করি না আমার মায়ের কাছে। কিন্তু ওরা সকল দুঃখ কষ্ট অভিমান গোপন করে, সকল সুখ ও আনন্দ বিসর্জন দিয়ে, বারো থেকে ষোলো ঘণ্টা ঠাঁই দাঁড়িয়ে, ফল বিক্রি করে, মাসের শেষে লাভের প্রায় সবটুকুই মায়ের কাছে, মায়ের দেশে পাঠিয়ে দেয়। মা-বাবা ভাইবোনকে ওরা কখনোই প্রকৃত কষ্টসত্যগুলো বলে না। জননী জন্মভূমি এবং গর্ভধারিণী মায়েদেরকে বলছি– মা, তোমাদের সংগ্রামী বায়েজিদদের জন্যে দুহাত তুলে দোয়া কোরো।
রবিশঙ্কর মৈত্রী
১৭ই মে ২০১৯
প্যারিস, ফ্রান্স।