সাংবাদিক তুহিন খন্দকার উপর প্রকাশ্য হামলা” ক্যামেরা ভাঙচুর” মামলা নেয়নি ওসি
সাগর চৌধুরীঃ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে সাংবাদিক তুহিন খন্দকারের উপর হামলা ও ক্যামেরা ভাংচুর করে ছিনিয়ে নিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা।
গত শুক্রবার বিকালে অনিল মাষ্টার এর বাড়িতে
পেশাগত কাজে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এ হামলার শিকার হন ভোলা জেলা অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি তুহিন খন্দকারসহ আরো ৩ সাংবাদিক।
কাচিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ছলেমানের ছেলে সেলিম, তুহিন অরফে নাদিম, শাহীন আলম খোকন, সোহেব, নাঈম, মৌসুমি ও লাল মিয়ার ছেলে ছলেমান সন্ত্রাসী কার্মকান্ড চালিয়ে ৪ সাংবাদিকের উপর হামলা চালায়।
তাদের ক্যামেরা ভাংচুরকরে ছিনিয়ে নেয়। এসময় উপস্থিত আহত সাংবাদিকদের সামনেই লোকমান নামক ভিক্টিমসহ তার পরিবারকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহত সাংবাদিকরা সহ ভিক্টিম ও তার পরিবার বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।
আহত সাংবাদিক তুহিন খন্দকার জানান, ভুক্তভোগী লোকমান নামক ব্যক্তির বসতঘর জোরপূর্বক দখলসহ তার পরিবারকে পিটিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনায় ভোলা জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগ করেন। সত্যতা যাচাই করতে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে ভুক্তভোগী লোকমান ও তার পরিবারকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। ঘটনাটি ক্যামেরায় ভিডিও ধারন করি। হঠাৎ সাংবাদিকদের উপর হামলা করে ক্যামেরা ভাংচুর চালিয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। এতে ভুক্তভোগী লোকমানসহ তার পরিবার ও ৪ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছে। ক্যামেরা ছিনিয়ে নিলেও মোবাইলে হামলার কিছু ভিডিও রয়েছে। যাহা প্রকাশ্য সাংবাদিক ও ভুক্তভোগীদেরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করতে দেখা যায়। থানায় মামলা করতে গেলে ভুক্তভোগী ও সাংবাদিকের মামলা নেয়নি বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া।
সাংবাদিকের উপর হামলা ও মামলা না নেওয়ার ঘটনায় ফেইসবুকে নিন্দার ঝড় ওঠে। অন্যদিকে ভুক্তভোগী লোকমান জানান, তার বিল্ডিং বসত ঘর জোরপূর্বক দখলকরে তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। ৯৯৯ এ কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পুলিশের সামনেও তাদেরকে মারধোর করে। পরে থানায় অভিযোগ করেও কোন বিচার না পাওয়ায় ভোলা জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তকরে সংবাদ প্রকাশকরতে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী লোকমান। ঘটনা জানতে ভোলা জেলা অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক তুহিন খন্দকারসহ ৩ জন ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে সাংবাদিকদের সামনেই ভুক্তভোগী লোকমানসহ তার পরিবাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। ভিডিও ধারন করার সময় সাংবাদিকদেরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যামেরা ভাংচুর চালিয়ে ছিনিয়ে নেয় হামলা কারীরা। ঘটনায় সাংবাদিক ও ভুক্তভোগীর মামলা নেয়নি পুলিশ।
এঘটনায় রবিবার ভোলায় আদালতে মামলা করেন সাংবাদিক তুহিন খন্দকার। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত ডিবি পুলিশকে তদন্তকরে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। যাহা ভোলা বোরহানউদ্দিন আমলী আদালত সি আর মামলা নং- ২৩/ ১লা জানুয়ারী ২০২৩ইং।
এদিকে হামলা কারীদের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে হত্যার হুমকি দেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী তুহিন ওরফে নাদীম এর বিরুদ্ধে একই উপজেলয় হাসান নগর ইউনিয়নে নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলায় সাজা দেয় ভোলার বিজ্ঞ আদালত। পরে কয়েকমাস জেল খেটে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিনে আসেন তিনি। সন্ত্রাসী ছলেমান এর বিরুদ্ধে এসিড মামলা ও ভূমি দখলের মামলা ছিল। এলাকায় পূর্ব থেকেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সেলিমের বিরুদ্ধে, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা ও জোরপূর্বক জমি দখলের মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।
সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনির হোসেন মিয়া’র কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, জনাব আপনাকে স্বাগতম বোরহানউদ্দিন থানায়। আপনি আমার সরকারি ফোন নাম্বারে একাধিক বার ফোন করেছেন। বিধিত কারণে ফোন রিসিভ করতে পারি নি। এই জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
সংবাদিক তুহিন খন্দকারের উপর হামলার ঘটনায় মামলা নেননি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমিও মানুষ। জ্বীন, বা অমন কিছু না। আমি ভুলের উদ্ধে না,ঘটনাস্থলে আমি পুলিশ সদস্য পাঠিয়েছি, সেই এসআই ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যে রিপোর্ট দিয়েছে, তার আলোকেই ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। সাংবাদিক তুহিন খন্দকার থানায় এসেছিলেন। আমি তার কথা মনোযোগের সাথে শুনেছি।
পরে জেনেছি, সেই ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
আদালতের চলমান কোন ঘটনায় আমি বক্তব্য দিতে পারি না।
আমি পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য আমার বাবা একজন শিক্ষক ছিলেন। মানুষের সেবা করার জন্যই পুলিশ বাহিনীতে এসেছি।
তাছাড়া, আপনি গণমাধ্যম কর্মী আপনার কলম ধরে রাখার ক্ষমতা আমার নেই। আপনি সংবাদ লিখবেন।
তবে, কোর্টের পেশকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি, নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, মামলা দায়ের হয়েছে। যেহেতু মামলার বাদী তদন্ত চেয়েছিলেন, সেহেতু আদালত ডিবি’র কাছে তদন্তের জন্য পাঠাবেন।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, কবে নাগাদ এর তদন্ত শুরু হবে জানি না। তবে মামলা কোর্টে করলেই তো আর তদন্ত শুরু হয়ে যায় না। কিছু প্রক্রিয়া মধ্যে যেতে। অনেক কাজ আছে ভাই। সবকথা আপনাকে বলা যাবে না।
গণমাধ্যম কর্মিরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে এমন হামলার শিকার হচ্ছেন যা ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে।
এর আগেও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় সাংবাদিকদের উপর হামলা হয়েছে। সে সময়ও থানার ওসি থানায় মামলা নিতে গড়িমসি করার অভিযোগ রয়েছে।
আরও সংবাদ পড়ুন।
বোরহানউদ্দিনে প্রকাশ্য বসতঘর দখল”তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ভিক্টিমসহ সাংবাদিকদের উপর হামলা