কেমন কন্ঠস্বর আবৃত্তির উপযোগী – আশরাফুল আলম
আবৃত্তি শিখতে চান এমন এক বন্ধু আবৃত্তি করেন এমন এক বন্ধুর কাছে জানতে চইল আমার এ গলায় আবৃত্তি হবে কি ? উত্তরে হ্যাঁ অথবা না বলতে হবে। এই বলার ভিত্তিটা কী ? শুধু মাত্র এ প্রেক্ষপটে শিরোনাম ও লেখার বক্তব্য বিবেচ্য।
কন্ঠস্বরটি কেমন হলে আবৃত্তির উপযোগী বলে বিবেচিত হবে। এক কথায় এর উত্তর স্বাভাবিক কন্ঠস্বরই আবৃত্তির উপযোগী। পরের প্রশ্নটি অনিবার্য ভাবে আসবেই, স্বাভাবিকের মান দণ্ড কী? এ প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজা পরের কথাগুলোতে ।
আমরা ছোট থেকেই বিচিত্র ধরনের কন্ঠস্বরের পরিবেশে বসবাস করি। পরিবার, বড়ি, স্কুল, পথঘাট, হাটবাজার, খেলার মাঠ, মানুষের জটলা ইত্যাদি। ফলে ছোট বেলাতেই আমাদের শ্রবণ অভিজ্ঞতা স্বয়ংক্রিয় ভাবে বলতে সক্ষম কোন কন্ঠ স্বাভাবিক কোনটা নয়।
৬ থেকে ১০/১২ বছরের শিশুরা বাড়ির কাছেই খেলছে বা হৈচৈ করছে। এক অপরিচিত ভদ্রলোক এসে তাদের ডাকলেন। সবাই তখন চুপ। বললেন ,১৭ নম্বর বাড়িটা কোথায় বলতে পার ? লোকটির কন্ঠস্বর প্রচন্ড কর্কশ অথবা ধরা যাক খুবই নাকী। মূহুর্তেই শিশুরা হেসে ফেলবে অথবা হাসতে গিয়ে হাসিটাকে চেপে রেখে নিজেদের এ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আড়াল করবে। (এই নাকী গলার এ রকম একটি দৃশ্যের আমি প্রত্যক্ষদর্শী। ভদ্রলোকের গলগন্ড ছিল । নাকী গলা প্রতিটি উচ্চারণে চন্দ্রবিন্দু দেবে) এই শিশুকালেই তারা শ্রবণ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জেনে গেছে এ ধরনের কন্ঠস্বর একেবারেই অস্বাভাবিক। ভদ্রলোক জন্মসূত্রে কন্ঠস্বরটি পেতে পারেন অথবা অসুস্থ হয়েও এমনটি হতে পারে । আমাদের শ্রবণ অভিজ্ঞতা এ ধরনের কন্ঠস্বরকে কিছুতেই স্বাভাবিক বলে মেনে নেবে না।
কিন্তু কারো কন্ঠস্বর যদি আমাদের শ্রবণের কাছে সহনীয় পর্যায়ে যৎ সামান্য ফ্যাসফ্যাসে, তীক্ষ্ণ, হালকা কর্কশ বা যৎ সামান্য ভাঙ্গা ভাঙ্গা হয় তাহলেও আমাদের শ্রবণ কন্ঠটিকে গ্রহণ যোগ্যতার মধ্যে নিয়ে নেবে ।
তাই কেমন কন্ঠস্বর আবৃত্তির উপযোগী ? এর উত্তরে বলা যায় :
আমাদের শ্রবণ অভিজ্ঞতায়
স্বভাবিক বলে বিবেচিত কন্ঠস্বরই
আবৃত্তির উপযোগী ।
তবে শিক্ষা ও অনুশীলনের মাধ্যমে কন্ঠস্বরকে মান সম্পন্ন করে তুলতে হবে।
অন্যান্য বাচিক পরিবেশনার ক্ষেত্রেও কন্ঠস্বর বিষয়ে ধরনাটি প্রযোজ্য ।
আশরাফুল আলম।
২২ সেপ্টেম্বর ২০২২