চরফ্যাশন হাসপাতাল টাকা ছাড়া মিলে না সেবা
সবই আছে কিন্তু বিকল!
আদিত্য জাহিদ,চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার ৬ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে ১ শত শয্যায় উন্নতি করণসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি এখন পযর্ন্ত। দালালদের দৌড়াত্বে কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযান পরিচালনা করেছে। নামে মাত্র জরিমানায় ছাড় দেয়া হয় দালালদের। টাকা ছাড়া মিলেনা স্বাস্থ্য সেবা। জরুরী বিভাগে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সেকমো থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা টাকা ছাড়া সেলাই, প্লাষ্টার, ড্্েরসিং করেন না। হাসপাতালের ছাদে ও বিভিন্ন স্থানে বজ্য রাখা হয়। ১৫/২০ দিন পর পর পৌরসভার গাড়ি বর্জ্য অপসারন করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোভন বসাক সত্যতা শিকার করে বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি জেনে তাদেরকে মৌখিক সর্তক করেছি পরবর্তীতে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেব। ্এছাড়া জরুরী বিভাগে রোগীর স্বজনকে পেটানোর সময় কর্তব্যরত চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। আলট্্রাসনোগ্রাম মেশিন শুরু থেকেই বিকল মেরামত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোভন বসাক।
হাসপাতালের প্রতিটি তলায় ময়লার ভাগাড়। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ঝাড়–দার মো. হোসেন উপপজেলা চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক (নেতা) হওয়ার সুবাদে কোন কাজ তিনি করেন না। হাসপাতাল ভবনের ভিতর বাহির একই অবস্থা বিরাজমান। শশীভুষণ থানার উত্তর আইচা গ্রামের সালাম সিকদার তার ভাতিজার চিকিৎসা করাতে গিয়ে হাসপাতালের ফ্লোরে দীর্ঘসময় রোগীদেরর মল পড়ে থাকতে দেখেন। ২ ঘন্টায়ও কেউ আসেনি পরিস্কার করার জন্য। তার সাথে কথা বলার সময় হাতে একটি এক্সরে প্লেট দেখা যায়। হাসপাতাল ইনডোর চিকিৎসা নিয়ে বাহিরে ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে রিপোর্ট করাতে হয় বলে জানান। বিকল অযুহাতে রোগীরা রিপোর্ট করাতে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হয়ে পড়েছেন। প্রসূতি বিভাগে সিজার করার চিকিৎসক ও সরঞ্জামাদি থাকলেও হাসপাতালে মাসে ১টিও হয় না অপরদিকে একই চিকিৎসকরা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ৫ থেকে ৭ টি করে সিজার করেন। প্যাথলজি জনবল সহ সব কিছু থাকলেও চিকিৎসকরা কম খরচে ভাল রিপোর্টের আশ্বস্থ করে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের নাম বলে দিয়ে রিপোর্ট করিয়ে বিকেলে সেখানে দেখাতে বলেন। জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা
অধিকাংশ সময় থাকেন না। থাকলেও খোশ গল্প নিয়ে ব্যস্থ থাকার বিষয়ে রোগীর স্বজনরা প্রতিবাদ করায় রুম আটকে মারধরের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কতব্যরত চিকিৎসক অন্যত্র বদলি হয়ে চলে গেছেন। চরফ্যাশন কলেজের সাবেক এক অধ্যক্ষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার আত্মীয়কে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে অব্যবস্থপনার জন্য কথা বলায় আয়া রোকেয়া তাকে অপমান অপদস্থ করেন। তিনি জানান,রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেবা দেয়া হয়।
হাসপাতালে মেডিসিন ষ্টক চার্ড প্রতিদিন আপডেট করা হয় না। অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী বা টাকার বিনিময়ে মিলে হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত সেফটিক্সাজন, ওমিপ্রাজল, কিটোরোলাক, ফ্লুক্সাসিলিনি জাতীয় ইনজেকশন। গরীব অসহায়রা এসব ইনজেকশন বাহির থেকে কিনতে হয়।
হাসপাতাল থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে বের হবার সময় দালাল বিড়ম্ভনায়। টানা হেচড়া থেকে শুরু করে শারিরীক নির্যাতনের ভিডিও বেশ কয়েকবার ভাইরাল হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রাহুল আল নোমান অভিযান চালিয়ে কয়েকজন দালালকে জরিমানাও করেছেন।
সরজমিন পরিদর্শণ কালে দেখা যায়, সিট খালি না থাকায় ফ্লোরে চিকিৎসা নিতেছে অথচ কোভিড ডেঞ্জার জোন রুমে ২০টি অত্যাধুনিক বেড প্যাকেট বন্দী রয়েছে এছাড়াও ইয়োলো কোভিড রুমে খালি বেড পড়ে থাকলেও ২টি রুমই তালা বন্ধী অবস্থায়।
হাসপাতালে সিজার না করা বা হওয়ার বিষয়ে গাইনি চিকিৎসক হোসনেয়ারা জানান, হাসপাতালে যন্ত্রপাতি থাকলে বিকল থাকার কারনে সিজার করা সম্ভব হয়না।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নেতা ও ঝাড়–দার হোসেন বলেন, ৫০ শয্যা হাসপাতালকে উন্নতি করন করা হলেও জনবল না বাড়ানোর কারনে মালি মনির, এমএলএসএস হাফিজুর রহমান, সুইপার আলম, জোসনা, হোসেন, আলম, মাহফুজ, বাচ্চু, খোকন, আয়া আছিয়া, রোকেয়া (১) রোকেয়া (২) ১০০ শয্যা রোগীর সেবা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
প্রশ্নের জবাবে মো. হোসেন বলেন, রোগী ও আগত দর্শনার্থীদের ময়লা আবর্জনা ও হাসপাতাল বর্জ রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানালা দিয়ে বাহিরে ফালায় এছাড়া কর্মরত সুইপাররা হাসপাতাল ৫ তলা ভবনের ছাদে সিড়ির গোড়ায় সংরক্ষণ করেন। ১৫/২০ দিন পর পৌর সভার গাড়ি আসলে সব অপসারন করা হয়। অব্যবস্থপনার জন্য কথা বলায় আয়া রোকেয়া তাকে অপমান অপদস্থ বিষয়ে জানান, রোকেয়া বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। টাকা চাওয়া বা নেয়ার বিষয়টি অসত্য বলে দাবী করেন।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোভন বসাক বলেন, আমি বার বার চেষ্টা করছি হয়রানী মুক্ত চিকিৎসা দেয়ার। রোগী ও প্রেসক্রিপশন ধরা দালাল নির্মূলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও সহযোগিতাও নিয়েছি। চিকিৎসকরা রোগী বাহিরে পাঠানো, চিকিৎসক থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা টাকা নেয়ার বিষয়ে আমি বেশ কয়েকবার অবগত হয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং সতর্ক করে করেছি।
এই বিষয় গুলো নিয়ে কথা বলতে চাইলে, ভোলা জেলার সিভিল সার্জন এর মুঠোফোনে কল করলে, তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।