ইলিশা ইউসি মাঃবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ

Picsart_22-05-24_12-17-58-030.jpg

ইলিশা ইউসি মাঃবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধিঃ ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী, অর্থ আত্মসাৎ এবং ভুয়া নিয়োগ দিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থরা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তদন্ত করে প্রধান শিক্ষকের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

অফিস সহকারি শারমিন বেগমের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অফিস সহকারী হিসেবে ২০১৫ সালে শারমিন বেগম নিয়োগ পান। নিয়োগের কয়েকদিন পরে ৫/৬/ ১৫ ইং তারিখ প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন ওই অফিস সহকারীকে হোটেল প্যাপিলনে আসতে বলেন। ওই নারী সেখানে আসলে প্রধান শিক্ষক তাকে কু-প্রস্তাব দেন। ওই নারী তার প্রস্তাবে রাজী না হলে তাকে চাকুরী চ্যুতির ভয় দেখান এবং বিকল্প হিসেবে দুই লক্ষ টাকা দাবী করেন। ওই অফিস সহকারী উপায়ন্ত না পেয়ে লম্পট প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে বাঁচার জন্য টাকার পরিবর্তে তার স্বর্ণের গহনা প্রদান করতে রাজী হন। গহনা দেয়ার শর্তে প্রধান শিক্ষক ওই দিনের মতো ওই নারীকে ছেড়ে দেন। এর একদিন পরে মনির উদ্দিন ওই নারী অফিস সহকারীর বাসা গিয়ে তার সাড়ে ৪ ভরি গহনা নিয়ে আসেন যার বর্তমান বাজার মূল্য তিন লক্ষ টাকা।

গহনা নেয়ার সময় প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন বলেন যে, এগুলো এখন বন্ধক রেখে আমার কাজ সারবো। পরে তোমাকে এগুলো ফেরৎ দিবো। ওই নারী পরবর্তীতে তার গহনা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন তাকে কুপ্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্য বলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে গহনা ফেরত দিবে না বলে অফিস সহকারীকে জানিয়ে দেন। এর কিছুদিন পরে প্রধান শিক্ষক ওই নারীর বাসায় গিয়ে তাকে জোরপূর্বক চাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এসময় ওই নারী ডাকচিৎকার দিলে পাশের রুম থেকে তার মেয়ে এসে প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিনকে চড় মারেন। লোক লজ্জা এবং চাকুরি চ্যুতির ভয়ে এসব ঘটনা ওই নারী অফিস সহকারী আইনের আশ্রয় নেননি বলে জানান। সর্বশেষ গত ৩মে ওই নারী প্রধান শিক্ষকের কাছে গহনা ফেরত চাইলে গহনা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বললে চাকুরি খেয়ে ফেলার হুমিক দেয়।
ওই দিনই ওই নারী স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এছাড়াও ওই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত নৈশপ্রহরী নুরুল ইসলাম জানান, তার মেয়ে জরিনাকে ওই স্কুলে আয়া হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার মেয়েকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেননি। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক অবসরপ্রাপ্ত নুরুল ইসলামকে দিয়ে দুই বছর স্কুলের পাহারাদার হিসেবে ডিউটি করিয়েছেন। কিন্তু এ কাজের জন্য নুরুল ইসলামকে কোন বেতন দেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে নুরুল ইসলাম গত ১৫মে স্কুল ব্যবস্থাপক কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন

অভিযোগ সম্পর্কে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খাদিজা আক্তার স্বপ্না বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এগুলো সব ভুয়া, মিথ্যা কথা। নুরুল ইসলামকে দিয়ে ডিউটি করিয়েছি সত্য, কিন্তু স্কুল থেকে তাকে টাকা দেওয়া হয়েছে।

অফিস সহকারীর অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, আমি তার কাছ থেকে কোন টাকা চাইনি এবং তার কাছ থেকে গহনাও নেই নি। আমাকে ঘায়েল করার জন্য এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top