সাংসদ একরামুলকে পদ থেকে অব্যাহতি, চূড়ান্ত বহিষ্কারের সুপারিশ

নোয়াখালী জেলা আ.লীগ
সাংসদ একরামুলকে পদ থেকে অব্যাহতি, চূড়ান্ত বহিষ্কারের সুপারিশ

জেলা প্রতিনিধিঃ নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীকে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদককে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে সুপারিশ পাঠাবে জেলা আওয়ামী লীগ।

শনিবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী এই সিদ্ধান্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

খায়রুল আনম চৌধুরী আজ সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় বলেন, ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচন ও চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরোধিতা করার কারণে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য দলের সভাপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

দলের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে সন্ধ্যায় সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তাঁর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটায় শহরের আবদুল মালেক উকিল সড়কের দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির বৈঠক শুরু হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আহ্বায়ক কমিটির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহিন, নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র মো. সহিদ উল্যাহ খানসহ ৮৪ জন সদস্যের মধ্যে ৭৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত বহিষ্কারের সুপারিশ–সংবলিত প্রস্তাবটি আজ রোববার দলের সভাপতির কাছে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরোধিতায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের যাঁরা জড়িত ছিলেন বা আছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী বলেন, সভায় ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নোয়াখালী পৌরসভাসহ বিভিন্ন উপজেলার ইউপি নির্বাচনে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর প্রকাশ্যে বিরোধিতা ও নৌকার বিপক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীকে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি এবং দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে চূড়ান্ত বহিষ্কারের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মমিন বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের কথাটি তিনি কেবলই শুনেছেন। তাই এ বিষয়ে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে পারছেন না। তবে তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তাঁকে তো দল থেকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা কিংবা কৈফিয়ত চাওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু দল থেকে কোনো অভিযোগের বিষয়ে কেউ সাংসদ একরামুল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি কিংবা তাঁকে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। কারও বক্তব্য না শুনে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।

প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাচন, তার আগে কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউপি নির্বাচন এবং আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সুবর্ণচরের চর জুবলী ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ও নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করার অভিযোগ রয়েছে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top