নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন দুই সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং দিমিত্রি মুরাতফ

নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন দুই সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং দিমিত্রি মুরাতফ

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদকঃ ফিলিপিন এবং রাশিয়ায় মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে “সাহসী লড়াই”-এ অবদান রাখার জন্য এই দুটি দেশের সাংবাদিক মারিয়া রেসা আর দিমিত্রি মুরাতফকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

নোবেল কমিটি এই সাংবাদিক যুগলকে বর্ণনা করেছে “এই আদর্শের জন্য সংগ্রামরত সব সাংবাদিকদের প্রতিনিধি” হিসাবে।

সম্মানজনক এই পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১১ লাখ মার্কিন ডলার)। নরওয়ের নোবেল ইনস্টিটিউট এই পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

তাদের বিজয়ী নির্বাচন করা হয়েছে বাছাই করা ৩২৯ জনের তালিকা থেকে।

মিজ রেসা র‍্যাপলার নামে একটি সংবাদ সাইটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মত প্রকাশের স্বাধীনতার আদর্শ সমুন্নত রেখে যেভাবে তার নিজের দেশ ফিলিপিনে “ক্ষমতার অপব্যবহার, ঊর্ধ্বমুখী সহিংসতা এবং ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্বপরায়ণতার খবর প্রকাশ করেছেন” তার জন্য তাকে প্রশংসা করা হয়েছে।

মি. মুরাতফ নিরপেক্ষ সংবাদপত্র নোভোজা গেযেটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ২৪ বছর ধরে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক। নোবেল কমিটি বলেছে যে রাশিয়ায় ক্রমশ আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠা পরিবেশেও মি. মুরাতফ কয়েক দশক ধরে বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে লড়াই করে গেছেন।

“মুক্ত, নিরপেক্ষ এবং তথ্য-ভিত্তিক সাংবাদিকতা ক্ষমতার অপব্যবহার, মিথ্যা প্রচার এবং যুদ্ধ প্রচারণা রুখতে সাহায্য করে,” কমিটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে: “বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সফলভাবে সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা, নিরস্ত্রীকরণ এবং আমাদের জীবদ্দশায় একটা উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলা কঠিন।”

২০২১ নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করেন নরওয়ের নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির সভাপতি বেরিত রেইস-অ্যান্ডারসন – ৮ই অক্টোবর ২০২১

২০২১ নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করেন নরওয়ের নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির সভাপতি বেরিত রেইস-অ্যান্ডারসন

নোবেল শান্তি পুরস্কারের সম্মান দেয়া হয় এমন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে, যিনি বা যারা “বিভিন্ন দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব বা সৌহার্দ্য গড়ে তুলতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন”।

গত বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিল জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই এবং শান্তির পক্ষে পরিস্থিতি উন্নত করতে সংস্থাটির কাজের জন্য তাদের এই পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।

দুই বিজয়ীর প্রতিক্রিয়া
র‍্যাপলারের একটি লাইভ সম্প্রচারে মিজ রেসা বলেন তিনি এটা “ভাবতেই পারছেন না”।

তিনি বলেন, তার বিজয় এটাই প্রমাণ করেছে যে “তথ্য ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়…তথ্য বিহীন বিশ্বের অর্থ সত্য ও আস্থাবিহীন পৃথিবী”।

আর জনপ্রিয় টেলিগ্রাম চ্যানেল পডিওমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. মুরাতফ বলেছেন: “আমি হাসছি। আমি এটা আশাই করিনি।”

তিনি এই পুরস্কারকে বর্ণনা করেছেন “রুশ সাংবাদিকতা যা এখন দমনের মুখে তার প্রতি একটা উচিত জবাব হিসাবে”।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকফ সম্পাদক মি. মুরাতফকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “তিনি তার নিজের আদর্শের প্রতি সবসময় অবিচল থেকেছেন, তার বিশ্বাসে তিনি নিবেদিত প্রাণ, তিনি প্রতিভাবান এবং তিনি সাহসী।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top