পুলিশের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি
নগর প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে শুরু থেকেই সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে মাঠে রয়েছে পুলিশ।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের সময় পুলিশের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, কর্মকর্তাদের কাজে কোনো ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় ডিএমপি মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগ।
ডিএমপি জানায়, করোনার বিস্তার রোধে একদিকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবাসহ জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং অতি জরুরি প্রয়োজনে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত বিনা কারণে বা উপযুক্ত পাস ব্যতীত কোনো ব্যক্তি যাতে রাস্তায় বের হতে না পারেন তা নিশ্চিতকল্পে ২৪ ঘণ্টা ডিএমপির সদস্যরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৪ এবং ১৫ এপ্রিল সাধারণ মানুষের সহযোগিতা নিয়ে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের কাজ অনেকটা সফলতার সঙ্গেই সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
যদিও বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়া ব্যক্তি এবং বিভিন্ন পরিষেবায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা কষ্টকর কাজ। কেননা কিছু কিছু ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া গাড়ি নিয়ে বের হওয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে যেয়ে পুলিশকে সারাদিনই গলদঘর্ম হতে হয়েছে।
এতে বলা হয়, কিছু মিডিয়ায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কিছু ব্যক্তিবর্গ পুলিশের চেকপোস্টে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। বর্ণিত ঘটনার একটিতে দেখা যায়, কারওয়ান বাজারে পুলিশ একটি প্রাইভেট কারের ড্রাইভারকে বাইরে আসার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি গাড়িটি জনৈক চিকিৎসকের বলে বর্ণনা দেন। কিন্তু চিকিৎসক গাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। ড্রাইভার উক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়। কিন্তু গাড়ির কাগজপত্রে বর্ণিত গাড়ির মালিকের সঙ্গে বর্ণিত চিকিৎসকের সামঞ্জস্য না থাকায় ড্রাইভারের বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
অন্যদিকে, জাহাঙ্গীর গেট এলাকার এক ঘটনায় এক নাগরিক নিজ বাসা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বের হলে কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণিসহ বেশ কয়েকটি চেকপোস্টের মুখোমুখি হন। এতে হাসপাতালে পৌঁছাতে তার দেরি হচ্ছিল। জাহাঙ্গীর গেট সংলগ্ন চেকপোস্টে তিনি ৩০ সেকেন্ডের মতো আটকে ছিলেন বলে জানান। যাতায়াতের সময় যারা আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদেরকেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছে যেটি চলমান বিধি নিষেধের পরিপ্রেক্ষিতে যৌক্তিক একটি বিষয়।
এতে আরও বলা হয়, কোভিড মহামারির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মেনে চলা সব নাগরিকের সমান দায়িত্ব। এ সমস্ত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ডিএমপি অঙ্গীকারবদ্ধ। কোনো পুলিশ সদস্য যাতে কোনো অপেশাদার আচরণ না করেন, সেজন্য সর্বদা তাদের আচার আচরণ মনিটর করা হয়ে থাকে এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে তাদের উদ্বুদ্ধ করা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ চলমান আছে। পুলিশের কাজে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। কোনো ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।