অদূর ভবিষ্যতে কৃষিই হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় খাত – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
বিশেষ প্রতিবেদকঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “অদূর ভবিষ্যতে কৃষিই হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি বড় খাত। সেজন্য আমরা যে যেখানে আছি সেখান থেকে সকলে মিলে কাজ করতে হবে। আমরা কৃষি বিপ্লব সফল করবো। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা শুধু না, উদ্বৃত্ত সৃষ্টি করে সেটাকে আমরা বিদেশে রপ্তানি করবো। কৃষি খাতে শেখ হাসিনার উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রাকে সফল করবো।”
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ চত্বরে গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নেছারাবাদ পিরোজপুর আয়োজিত কৃষি প্রযুক্তি মেলা ২০২০ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পিরোজপুর-এর উপপরিচালক চিন্ময় রায় ও নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হক। নেছারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক এস এম ফুয়াদ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানগণসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলার অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, “কৃষিতে আমরা এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। সেকেলে পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের পরিকল্পনায় রয়েছি। একই যন্ত্রে এখন ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তা বন্দী করা সম্ভব হচ্ছে। গ্রামে এক সময় লাঙ্গল দিয়ে চাষ করা হতো। এখন আমরা ট্রাক্টরসহ আধুনিক পদ্ধতি এমন জায়গায় নিয়ে এসেছি যে মানুষের কাঁধে জোয়াল বেঁধে তাকে ঠেলতে হয়না। সার, কীটনাশক, বীজ ও চাষাবাদের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কৃষিকে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর এবং যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কৃষি বিপ্লব তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের সম্প্রসারণ করতে হবে।”
সরকার কৃষকের জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা দিচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হচ্ছে, মর্টগেজ ছাড়া ঋণ দেয়া হচ্ছে এমনকি বর্গাচাষীদেরও ঋণ দেয়া হচ্ছে।”
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ উল্লেখ করে শ ম রেজাউল করিম আরো যোগ করেন, “কোভিড-১৯ এর সময় সারাবিশ্বে খাদ্যে মন্দা অবস্থা সৃষ্টির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ এসময় বাংলাদেশে একজন মানুষও খাবারের অভাবে মারা যায়নি। এর কারণ কৃষি উৎপাদন আমরা অব্যাহত রেখেছি। সে উৎপাদনের ধারাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, এক ইঞ্চি জায়গা কোথাও পতিত থাকবে না। বাড়ির আঙ্গিনায় ফলের গাছ রোপণের জায়গা, মাঠে ধান লাগানোর জায়গা, সবজি ফলোনোর জায়গা-সব জায়গা আমরা কাজে লাগাবো।”
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পূর্বে মন্ত্রী কৃষি প্রযুক্তি মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত বর্ণাঢ্য র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন এবং মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
পরে স্বরূপকাঠী সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নেছারাবাদ উপজেলা শাখা আয়োজিত নেছারাবাদ উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে পূজা পূর্ববর্তী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপজেলার দুর্গা মন্দিরের প্রতিনিধিদের হাতে অর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন তিনি।
এদিন সকালে মন্ত্রী পিরোজপুরের কৌরিখাড়ায় বিসিক শিল্পনগরীতে আগুনে ভস্মীভূত কারখানা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিক-কর্মচারীদের সাথে কথা বলেন।