সোশাল মিডিয়া ব্যবহারে শিক্ষকদের জন্য নতুন নির্দেশনা
শিক্ষা প্রতিবেদকঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকরা কী করতে পারবেন, আর কী পারবেন না, সেসব নির্ধারণ করে দিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বৃহস্পতিবার এই ছয় দফা নির্দেশনা দেশের সব সরকারি কলেজের অধ্যক্ষদের পাঠিয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, যুগোপযোগী ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার পাঠাদান এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অনেক ভূমিকা পালন করা হয় এবং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে অগ্রযাত্রার জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্র ও শিক্ষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে মাউশির নির্দেশনাগুলো-
১. সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, এমন কোনও পোস্ট, ছবি ভিডিও বা অডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। একইসঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস বা পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে, এমন কোনও পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থি কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি পরিপন্থি কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো লেখা, অডিও বা ভিডিও প্রকাশ বা শেয়ার করা এবং ভিত্তিহীন, অসত্য বা অশ্লীল তথ্য প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের গাইডলাইন, চাকরির বিধানাবলী এবং এ সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবেন।
৫. কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিধি ভঙ্গ করলে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং প্রয়োজনে তদন্ত করে এর প্রমাণসহ আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে অধিদপ্তরকে অবহিত করবেন।
৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় বিভিন্ন গ্রুপ বা পেইজের অ্যাডমিনরা পোস্ট/কমেন্ট ইত্যাদি অনুমোদনে করার সময় সরকারি নীতিমালার পরিপন্থি স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান, দপ্তর ও সংস্থার বিপক্ষে অবস্থানকারী কোনো পোস্ট অনুমোদন করবেন না। অন্যথায় অ্যাডমিন এবং পোস্টদাতা উভয়েই সরকারি বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত হবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের কীভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক ও শেয়ার করা থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা না মেনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘অপব্যবহার’ বা নিজ অ্যাকাউন্টে কেউ ‘ক্ষতিকারক কনটেন্ট’ দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে দায়ী করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।