ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার ২৫ ভাগ আসামি সাংবাদিক – মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
রাজনৈতিক প্রতিবেদকঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকরাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মামলার শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার সংস্থার তথ্য মতে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আর্টিকেল-১৯ এ মামলার হিসাব অনুযায়ী, এ বছরের ২২ জুন পর্যন্ত মোট মামলা হয়েছে ১০৮টি। এ সব মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে ২০৪ জনকে। তাদের মধ্যে সাংবাদিক ৪৪ জন, আর অন্য পেশার ১৬০ জন। এই হিসাবে প্রায় ২৫ ভাগ আসামিই সাংবাদিক।’
আজ শুক্রবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ বছরের জানুয়ারিতে ১০টি মামলা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ৯টি, মার্চে ১৩টি, এপ্রিলে ২৪টি, মে-তে ৩১টি এবং জুনের ২২ তারিখ পর্যন্ত ২১টি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১২ জন সাংবাদিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হয়েছেন।’
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এর তথ্য মতে, এ বছরের জুন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫৩ জনের বিরদ্ধে মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘প্রায় সবগুলো মামলার কমন অভিযোগ হলো— মানহানি বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। মামলার ভয়ে জাতির কণ্ঠ আজ রুদ্ধ, বিবেকের স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত; যা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১৯ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে ৬৩টি। ২০১৮ সালে ডিএসএ এবং আইসিটি অ্যাক্ট মিলিয়ে মামলা হয়েছে ৭১টি। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯ সালে এক বছরে মোট মামলা হয়েছে ৬৩টি। আর এ বছরের প্রথম ছয় মাসেই মামলা হয়েছে ১০৮টি।’
সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের তথ্য মতে বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক মামলার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয় না। তাই মানবাধিকার সংগঠনগুলোও তার খোঁজ পায় না। বাংলাদেশের একমাত্র সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের হিসাব অনুযায়ী, এই বছরের মার্চ পর্যন্ত ডিজিটাল আইনে মামলা হয়েছে মোট ৩২৭টি। জানুয়ারিতে ৮৬টি; এর মধ্যে থানায় ৪১টি এবং আদালতে ৪৫টি। ফেব্রুয়ারিতে ১১৯টি; এর মধ্যে থানায় ৯৫টি এবং আদালতে ৩৪টি। মার্চে ১২২টি; এর মধ্যে থানায় ৭৫টি এবং আদালতে ৩৭টি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের তথ্য মতে, ২০১৯ সালে মোট মামলা হয়েছে এক হাজার ১৮৯টি; এর মধ্যে থানায় ৭২১টি এবং আদালতে ৪৬৮টি। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৫০টির মতো মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত বিচারাধীন মামলা আছে এক হাজার ৯৫৫টি; এর মধ্যে থানায় দায়ের করা হয়েছে এক হাজার ৬৬৮টি এবং আদালতে ২৮৭টি। ৫৫টি মামলা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত আছে।’
বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজ বিশ্বদরবারে দুর্নীতির সূচকের তলানিতে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘World Justice Project এর Rule of Law Index-এ ১২৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১৫তম। প্রধানমন্ত্রী কি এর দায় এড়াতে পারবেন?’