প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষায় ‘জোনভিত্তিক লকডাউন’ হবে

20200607_163210.jpg

প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষায় ‘জোনভিত্তিক লকডাউন’ হবে

প্রধান প্রতিবেদকঃ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জোনভিত্তিক (রেড, ইয়েলো এবং সবুজ) লকডাউন ঘোষণার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছে।

সম্মতি পেলেই জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যক্রম শুরু করবে সরকার। রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতায় যে দুটি এলাকাকে পরীক্ষামূলক লকডাউন করার আলোচনা চলছে সেটিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তুত করে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির জন্য পাঠানো হয়েছে।

আজ রবিবার (০৭ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানোর কথা।জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরেই জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর আগে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপণ জারি করবে সরকার। তিনি জানিয়েছেন, আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রধানদের সমন্বয়ে একাধিক সভা করেছি। সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাংশ তৈরি করে তা প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির জন্য পাঠিয়েছি। আমাদের তৈরি করা সারাংশতে উল্লেখিত প্রস্তাব বা সিদ্ধান্তসমূহ যাচাই বাছাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা সেটি বাস্তবায়ন করবো। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পরীক্ষামূলক বলেন আর চূড়ান্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।

এ বিষয়টি জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি এখনও কিছু জানিনা। আমি আগে জেনে নেই, তার পরে আপনাকে জানাবো।

এদিকে সারাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে রেড, ইয়েলো এবং গ্রিনজোনে চিহ্নিত করে নতুনভাবে লকডাউন শুরু করার বিষয়ে শুক্রবার (৫ জুন) এক অনলাইন কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এমন অভিমত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, দেশের একটি এলাকায় যদি ১ লাখ মানুষ বসবাস করে আর সেখানে যদি ১৮ থেকে ২০ জন কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে থাকে তবে সেই এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়েও বিশ্লেষকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

কেউ কেউ বলেছেন, প্রতি লাখে ১৮ থেকে ২০ নয়, ৩০ থেকে ৪০ বা তার উপরে হলে সেই সব এলাকাকে রেড জোনে শনাক্ত করা হতে পারে। এ বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপক্ষোয় রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্র। 

সূত্র জানায়, এটা ওয়ার্ড ভিত্তিকও হতে পারে। এক্ষেত্রে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করে যাদের ইতোমধ্যেই কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে তাদের এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হবে। যে সব এলাকায় কম চিহ্নিত রোগী থাকবে সেসব এলাকাকে ইয়ালো জোন ও যে সব এলাকায় সংক্রমণ পাওয়া যাবে না সেসব এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ইয়ালো জোন ও গ্রিন জোনের কর্মকাণ্ড কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এই জোনের আওতায় থাকা এলাকাগুলোকে রাখা হবে নজরদারিতে। যাতে এইসব এলাকা থেকে কেউ রেড জোনে প্রবেশ করতে না পারে। একই সঙ্গে রেড জোনের কেউ যাতে ইয়েলো বা গ্রিন জোন এলাকায় আসতে না পারে সেজন্য নিশ্চিত করা হবে কঠোর লকডাউন।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান জানিয়েছেন, জোনভিত্তিক এলাকায় নিরাপত্তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে স্থানীয় প্রশাসন কঠোর হয়ে ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে আইসিটি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত রোগীদের চিহ্নিত করা হবে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে। এর জন্য বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সেটি ব্যবহার করে সকল এলাকায় এখন পর্যন্ত যত রোগী শনাক্ত হয়েছে তাদের একটা ম্যাপিং করা হবে। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে এই ম্যাপিংয়ের কাজ শেষ করা হয়েছে। এরপরেই নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য এলাকাগুলোতে এখন চিহ্নিত করার কাজ চলছে। বিশেষজ্ঞরা এগুলো নিয়ে কাজ করছেন। সব কিছু শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে তা বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top