এলো ফাল্গুন, এলো বসন্ত, ভালোবাসার রং নিয়ে

PicsArt_02-14-08.32.53.jpg

এলো ফাল্গুন, এলো বসন্ত, ভালোবাসার রং নিয়ে

বাতাসে বসন্তের আগমনী বার্তা। গাছ থেকে ঝরে পড়ছে পুরাতনি যতো ধূসর পাতা। আর তার জায়গা বদল করছে সবুজ কিশলয়। আচানক কোথাও ডেকে উঠছে কোকিল। রঙে-বেরঙের ফুলে ভরে উঠছে বাগানগুলো। দীর্ঘ শীতের কুয়াশা মোড়ানো প্রান্তর পাড়ি দিয়ে অবশেষে আমাদের দোরগোড়ায় এসেছে ফাল্গুন। এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত!

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুন। বাংলা বর্ষপঞ্জির হিসেবে রদবদল হওয়ায় ১৩ ফেব্রুয়ারির জায়গায় এখন থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারিই পালিত হবে পহেলা ফাল্গুন।

একই দিনেই পালিত হবে ভালোবাসা দিবসও। ফলে যুগপৎ ভালোবাসা আর বর্ণালী রঙের বাহার নিয়ে এসেছে এ দিন।  

কী নেই বসন্তের! আছে রং, রূপ, রস, লাবণ্য। আছে মাতাল দখিনা সমীরণ। ঋতুরাজের আগমনে খুলে গেছে দখিনা দুয়ার। মানব-মানবীর চিরন্তন ভালোবাসা উড়ছে রঙিন প্রজাপতি হয়ে। ফুলে ফুলে আছে মৌমাছির গুঞ্জন। নতুন প্রাণের পত্রপল্লবে জেগে উঠেছে বৃক্ষ-লতা-গুল্ম। নদীর কিনার থেকে আদিগিন্ত প্রান্তর, কুঞ্জবন, অরণ্য-পর্বতে ডেকেছে নবযৌবনের বান। প্রকৃতির এই রূপতরঙ্গ দেখেই কবিগুরু লিখেছিলেন- ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।’

শুধু প্রাণের দুরন্ত আবেগ আর প্রেমেই নয়, দ্রোহে-প্রতিবাদেও উত্তাল বসন্তের হৃদস্পন্দন। এ বসন্ত নিয়েই কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন- ‘এলো খুনমাখা তূণ নিয়ে/ খুনেরা ফাগুন।’ মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার চেয়ে এই ঋতুতেই তো বাংলার দামাল ছেলেরা শহীদ হয়েছে। তারই খুন মেখে আছে পলাশ-শিমুল। শুধু তাই নয়, স্বৈরাচারবিরোধী গণতন্ত্র দিবস হিসেবেও জ্বলছে পহেলা ফাল্গুন।

ইতিহাস বলে, ১৫৮৫ সালে মোগল সম্রাট আকবর ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘বসন্ত উৎসব’। ১৪০১ বঙ্গাব্দ থেকে সে উৎসব এ উৎসব মহানগর ঢাকা থেকে সারাদেশে নতুন করে তরঙ্গিত হতে শুরু করেছে। পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসবের রঙে মেতে ওঠে তরুণ হৃদয়, নতুন করে প্রাণ পায় প্রবীণেরা। বসন্তে শুধু প্রকৃতিই নয়, হৃদয়ও রঙিন হয়ে ওঠে। তাই তো বসন্ত আমাদের কাছে ‘প্রেমের ঋতু’।

এবারের বসন্তকে স্বাগত জানাতে ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ স্লোগানে রাজধানীর চারটি মঞ্চে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে জাতীয় বসন্ত উদযাপন পরিষদ। এর মূল আয়োজনটি হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায়।

এ ছাড়াও ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চ, সদরঘাটসংলগ্ন ওয়াইজঘাটের বুলবুল ললিতকলা একাডেমির মাঠ (বাফা) ও উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের রবীন্দ্র স্মরণীর উন্মুক্ত মঞ্চে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান হবে।

এছাড়া শুক্রবার ছায়ানটের আয়োজনে সংগঠনের নিজস্ব মিলনায়তনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একক ও সম্মিলিতি গান এবং নৃত্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হবে বসন্তকে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top