ঢাকার রাস্তা ফাঁকা; চারদিকে ছুটির আমেজ।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মানুষ অনেক আগেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে রাজধানীর বাসিন্দারা।
শনিবার রাজধানীর বড় একটি অংশই ছিল ফাঁকা। ছিল না চিরচেনা যানজট, কর্মব্যস্ততা। তবে ভিড় দেখা গেছে বিপণিবিতান এবং বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশনের আশপাশের সড়কে। এই ভিড়ও আজ রোববার কমে যাবে। আজ সকালে ঢাকার রাস্তা ছিল একদমই ফাঁকা।
ঢাকা শহরে কত মানুষ বাস করে আর ঈদ উপলক্ষে কত মানুষ ঢাকা ছাড়ে, তার সুস্পষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর মতে, ঢাকা শহরে ১ কোটি ৯০ লাখের মতো মানুষের বসবাস। এর মধ্যে গত ঈদে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। এবার ডেঙ্গু-আতঙ্ক ও বন্যার কারণে তুলনামূলকভাবে কম মানুষ ঢাকা ছাড়ছে।
সকালে রাজধানীর বাড্ডা থেকে কারওয়ান বাজারে এসেছেন অর্পিতা মণ্ডল। জানালেন, অন্য দিনের তুলনায় আজ তাঁর অর্ধেকেরও কম সময় লেগেছে। খিলগাঁও থেকে গণমাধ্যমকর্মী ফারহানা ইসলাম এসেছেন কারওয়ান বাজারে কর্মস্থলে। জানালেন, অন্য দিন রিকশায় আসতে যানজটের জন্য সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো। আজ এসেছেন মাত্র ১৫ মিনিটে।
ফাঁকা ঢাকায় আনন্দ করতেও বেরিয়েছেন অনেকে। শাহবাগে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিব হাসানের সঙ্গে। মোটরসাইকেলে বন্ধুকে নিয়ে তিনি ঘুরতে বের হন। অরিব বললেন, ‘ফাঁকা রাস্তায় ঘুরতে বের হয়েছি। দুই দিন আগেও যে পথ যেতে এক-দেড় ঘণ্টা লাগত, সেই পথে এখন ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগছে।’
মৎস্য ভবন, মতিঝিল, আরামবাগ, রাজারবাগ, মালিবাগ, পুরানা পল্টন, রামপুরা, হাতিরঝিল, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অরিবের কথার সত্যতা মিলল। এসব এলাকার রাস্তা ছিল অনেকটাই ফাঁকা। তবে কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকায় মানুষ ও যানবাহনের চাপ দেখা গেছে।
রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চলা বাসের সংখ্যাও ছিল কম। মোহাম্মদপুর থেকে উত্তরা পর্যন্ত চলাচল করা পরিস্থান পরিবহনের এক চালক বলেন, আজ বাস টার্মিনালের দিকের যাত্রীই বেশি। অন্য এলাকার যাত্রী তেমন নেই। তাই বাসও কম চলছে।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত সড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা। অথচ প্রায় প্রতিদিনই এই পথে ব্যাপক যানজটের শিকার হতে হয় যাত্রীদের।
ফার্মগেটে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্য বলেন, শুক্রবার রাতেও ফার্মগেট এলাকায় যানবাহনের চাপ ছিল। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে যানবাহনের চাপ খুবই কম। আজ সড়কে গাড়ির সংখ্যা আরও কম।
আজ রবিবার রাজধানীর মানুষ আরও কমে যাবে বলে অনেকেই ধারনা করছেন।